অনলাইন ডেস্ক : শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ কমাতে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় বিষয় কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর (ইইডি) আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়েছেন। ২০১৭-২০১৮ সালের এডিপি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ের প্রকৌশলীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের লক্ষ্যে আয়োজিত ওই সভা শেষে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা সচিব সোহরাব হোসাইন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশনার বিষয়টি উল্লেখ করে সচিব বলেন, ‘হুট করেই এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। তবে আমাদের মন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন- জেএসসিতে সাবজেক্ট কমিয়ে এনে চাপ কমানো যায় কি-না। সেটা নিয়ে আমরা কাজ করছি।’

সভায় অংশ নেওয়া এক প্রকৌশলী প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষাকে (পিইসি) ‘অপ্রয়োজনীয়’ অভিহিত করে এটি বাদ দেওয়ার জন্য শিক্ষামন্ত্রীকে অনুরোধ জানান। নুরুল ইসলাম নাহিদ এ বিষয়ে মন্তব্য না করলেও সচিব সোহরাব হোসাইন এ প্রসঙ্গে বলেন, পিইসি পরীক্ষা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়। এ ব্যাপারে তারাই সিদ্ধান্ত নেবে।

আরও সাড়ে ২২ হাজার নতুন ভবন :প্রকৌশলীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ জানিয়েছেন, ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত দেশের স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় সাড়ে ১০ হাজার নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২ হাজার ভবনের নির্মাণ কাজ এখনও চলমান। আগামী এক বছরের মধ্যে দেশব্যাপী আরও সাড়ে ২২ হাজার নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে। আধুনিক মানের এসব ভবন হবে ৪ থেকে ১০ তলাবিশিষ্ট।

এসব ভবনের নির্মাণকাজ যেন উন্নত ও টেকসই হয় সেদিকে মাঠ পর্যায়ের প্রকৌশলীদের খেয়াল রাখার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘মানের সঙ্গে কোনো আপস করা যাবে না। উন্নত ও সুন্দর ডিজাইনের ভবন নির্মাণ করতে হবে। এটা সময়ের দাবি। হাতে সময় কম; জুনের মধ্যে অসংখ্য বিদ্যালয় ভবন তৈরি করতে হবে।’ এবারের এডিপি বাস্তবায়নে প্রকৌশলীদের কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে যথাসময়ে কাজ সম্পন্ন করার আহ্বানও জানান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি আরও বলেন, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্মাণ কাজের গুণগত মানে পরিবর্তন হয়েছে। কাজের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এ পরিবেশ ও সুনাম ধরে রাখতে হবে। ঘুষ-দুর্নীতি অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।

প্রকৌশলীদের পদোন্নতি, পদ সৃষ্টিসহ সরকার শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উন্নয়নে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী জানান, এ অধিদপ্তরে বর্তমানে এক হাজার ৩২৭টি পদ রয়েছে। আরও ৩ হাজার ৬৭০টি নতুন পদ সৃষ্টির প্রক্রিয়া চলছে।

নুরুল ইসলাম নাহিদ আরও জানান, দেশের প্রত্যেক নির্বাচনী এলাকায় ২০টি হাই স্কুল, ৬টি মাদ্রাসা এবং সব কলেজে ভবন নির্মাণ করা হবে। ২০টি স্কুলের মধ্যে ১০টিতে নতুন ভবন এবং ১০টিতে ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ করা হবে। ২০০ কলেজে মহিলা আবাসিক হোস্টেল নির্মাণ করা হবে। এ জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রত্যেক উপজেলায় একটি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ (টিএসসি) নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১০০টির কাজ চলমান। চলতি বছরেই এ কাজ শেষ করতে প্রকৌশলীদের তাগিদ দেন মন্ত্রী।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী দেওয়ান মুহাম্মদ হানজালার সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন ছাড়াও বক্তব্য রাখেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মহিউদ্দীন খান, অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মজিবুর রহমান সরকার ও পরিচালক (প্রশাসন) খালেদা আক্তার।