লিটন হোসেন লিমন, নাটোর প্রতিনিধি :
এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলে নাটোরের ছাতনী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত দরিদ্র চা দোকানীর মেয়ে সোনিয়া খাতুন বড় হয়ে ডাক্তার হতে চায়।
বাড়িতে খাবার নেই, ঘরে বিদ্যুতের আলো নেই, গুচ্ছগ্রামের জীর্ণ শীর্ণ ঘরে বসে শুধু দিনের আলোতে লেখাপড়া করেই তার বড় বোন সুর্বণা এর আগে মানবিক বিভাগ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে জিপিএ-৫ পেয়ে এখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্থবর্ষে পড়ছে। এবার মেঝ বোন সোনিয়া খাতুন বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে।
বাবা জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ায় মা ছানোয়ারা বেগম রাস্তায় মাটি কাটার কাজ করে দুই মেয়ের লেখাপড়া চালাতেন। এখন বাবা আবুল কালাম কিছুটা সুস্থ্য হয়ে রাস্তার মোড়ে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে চায়ের দোকান করায় সামান্য রোজগারের ব্যভস্থা হয়েছে। সেই রোজগারে সংসারের ৫ সদস্যের খাওয়া দাওয়া ও দুই মেয়ের লেখাপড়ার খরচ জোগার না হলেও মাকে রাস্তার কাজ করতে দিচ্ছে না দুই মেয়ে। কিন্তু অভাব অনটনও তাদের পিছু ছাড়েনি। প্রতিনিয়ত আধ পেটা খেয়ে না খেয়ে তাদের লেখাপড়া করতে হচ্ছে। কেরোসিন কেনার সামর্থ না হওয়ায় ওরা বরাবরই শুধু দিনের আলোতে লেখাপড়া করেছে। সব বই কিনতে না পারায় ধার করেছে অন্য সহপাঠিদের বই নোট। ঈদ বা বছরের শুরুতে জোটেটি তাদের নতুন জামা।
ছাতনী শিবপুরের গুচ্ছগ্রামের জীর্ণ শীর্ণ ঘরে বসবাস করা দরিদ্র অসহায় এই বাবা-মা জিপিএ-৫ না বুঝলেও দুই মেয়ে ভালো কিছু করছে এটা বুঝতে পারছে। তাই তাদের প্রার্থনা সমাজের বৃত্তবান ও হৃদয়বান মানুষেরা যদি তাদের পাশে দাঁড়ায় তবে একদিন অবশ্যই তাদের মেয়ে সোনিয়া খাতুনের ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন পুরুন হবে।
তাদের স্কুলের শিক্ষক ইন্তাজ আলী বলেছেন, অদম্য মেধাবী সোনিয়া নিজের প্রচন্ড ইচ্ছার কারনেই জেএসসির পর এসএসসিতেও এমন ভালো ফলাফল করতে পেরেছে। সুযোগ পেলে একদিন ওরা সফল হবেই।