৫০টিরও বেশি দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে মৃত্যুর ঝুঁকি কতোখানি? বলা কঠিন। তবে গবেষকদের মতে প্রতি এক হাজার জনে ৫ থেকে ৪০ জনের মৃত্যু হতে পারে।

ধারণা করা হয় সবচেয়ে কাছাকাছি অনুমান হচ্ছে এক হাজার জনে ৯ জন। অর্থাৎ এক শতাংশ।

তবে এই মৃত্যু অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে: আক্রান্ত ব্যক্তির বয়স, নারী না পুরুষ, স্বাস্থ্য ভালো না খারাপ এবং আক্রান্ত ব্যক্তি যে দেশের সেখানে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কেমন ইত্যাদি।

প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে মৃত্যু হওয়ার ঝুঁকি কতোটা সেটা নিরূপণ করা পিএইচডি গবেষণার মতোই কঠিন।

অনেক ক্ষেত্রেই হয়তো এই ভাইরাস সংক্রমণের খবর পাওয়া যাবে না। কারণ সামান্য কিছু উপসর্গ দেখা দিলে অনেকেই ডাক্তারের কাছে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা আছে বলে মনে করেন না।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত লোকজনের মধ্যে ঠিক কতো মানুষ মারা যাচ্ছে সেবিষয়ে বিশ্বের একেক জায়গা থেকে একেক রকম হিসেব পাওয়া যাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাইরাসটির ধরনে ভিন্নতার কারণে মৃত্যুর হার যে একেক জায়গায় একেক রকমের হচ্ছে সেটা নিশ্চিত করে বলা যাবে না।

বরং ব্রিটেনে ইমপেরিয়াল কলেজের এক গবেষণা বলছে, এই ভাইরাসটি শনাক্ত করার ক্ষেত্রে একেক দেশের ক্ষমতার ওপর মৃত্যুর এই হার কম বেশি হওয়া নির্ভর করছে।

কোনো দেশে যদি সংক্রমণের হিসেব ঠিক না হয় তখন সেদেশে মৃত্যুর হার বেশি মনে হবে। কারণ আক্রান্তদের মধ্যে কারও মৃত্যু হলে সেটা হিসেবের বাইরেই থেকে যাবে।

আবার এর উল্টোটাও হতে পারে।

করোনাভাইরাস: আক্রান্ত দেশ থেকে বাংলাদেশে এলে ‘ঘরে থাকুন’

করোনাভাইরাসের কারণে কমেছে চীনে দূষণের মাত্রা

করোনাভাইরাস কতোটা প্রাণঘাতী?

এসব সীমাবদ্ধতার কথা মাথা রেখেও বিজ্ঞানীরা করোনাভাইরাসে মৃত্যুর হারের একটি চিত্র খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছেন।

যাদের শরীরে সামান্য কিছু উপসর্গ দেখা দিয়েছে এরকম ব্যক্তি, যেমন চীন থেকে ফিরিয়ে আনা লোকজনকে গভীর পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। শুধু তাদের হিসাব থেকে যদি মৃত্যু হার নির্ণয় করা হয় তাহলে এক রকমের চিত্র পাওয়া যাবে।

আবার যদি শুধু চীনের হুবেই প্রদেশ থেকে পাওয়া তথ্য বিবেচনা করা হয় তাহলে হিসেবটি হবে আরেক রকমের।

কারণ চীনের অন্যান্য এলাকা থেকে এই প্রদেশে মৃত্যুর হার অনেক বেশি।

একারণে বিজ্ঞানীরা সুনির্দিষ্ট কোনো হারের কথা বলেন নি। তারা বলেছেন, মৃত্যুর হার হতে পারে ১০০০ জনে ৫ থেকে ৪০।

কিন্তু এ থেকেও মৃত্যুর প্রকৃত চিত্র পাওয়া যায় না।

তবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে কিছু কিছু মানুষের মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি: বয়স্ক, অসুস্থ ব্যক্তি, এবং পুরুষ।

চীনে আক্রান্ত ৪৪,০০০ মানুষের তথ্য বিশ্লেষণ করে বলা হচ্ছে, মধ্য বয়সী মানুষের চেয়ে বয়স্ক মানুষের মৃত্যুর ঝুঁকি ১০ শতাংশ বেশি।

মৃত্যুর হার সবচেয়ে কম ৩০ বছরের কম বয়সী লোকজনের মধ্যে। এরকম ৪,৫০০ জনের মধ্যে মারা গেছে আট জন।

এছাড়াও যাদের ডায়াবেটিস আছে, আছে উচ্চ রক্তচাপ অথবা হৃৎপিণ্ড কিম্বা ফুসফুসের সমস্যা তাদের মধ্যেও করোনাভাইরাসে মৃত্যুর ঝুঁকি অন্তত পাঁচ গুণ বেশি।

এছাড়াও নারীর তুলনায় পুরুষের মধ্যেও সামান্য বেশি এই মৃত্যুর হার।

এগুলোর একটি আরেকটির সঙ্গে সম্পর্কিত এবং একারণে প্রত্যেক জায়গায় প্রত্যেক মানুষের ব্যাপারে এই মৃত্যুর হার সমানভাবে প্রযোজ্য নয়।

করোনাভাইরাসের কারণে চীনে ৮০ বছর বয়সী মানুষের মধ্যে মৃত্যুর হার যতো হবে ইউরোপ অথবা আফ্রিকার কোনো দেশে এই একই বয়সী মানুষের মধ্যে মৃত্যুর হার ততো হবে না।

আক্রান্ত হওয়ার পর কী ধরনের চিকিৎসা পাওয়া যাচ্ছে তার ওপরেও এই হার নির্ভর করে।

অর্থাৎ ভাইরাসের প্রকোপ মহামারী হিসেবে রূপ নিলে এটি মোকাবেলায় সেখানে কী ধরনের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা আছে তার কারণেও মৃত্যুর হার কম বেশি হতে পারে।

মৃত্যুর এই হার তুলনা করাও কঠিন কারণ ঠাণ্ডা ও সর্দি কাশি দেখা দিলেও অনেকে ডাক্তারের কাছে যান না।

ফলে ঠিক কতো জনের আসলে সর্দি কাশি হয় অথবা কতো জন নতুন ভাইরাসে আক্রান্ত হন তার সঠিক হিসেবও নিরূপণ করা সম্ভব হয় না।

কিন্তু তারপরেও ফ্লুর কারণে প্রত্যেক শীতেই মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।

তবে আশা করা হচ্ছে, সময়ের সাথে সাথে বিজ্ঞানীরা একটি পরিষ্কার চিত্র খুঁজে বের করতে পারবেন যে করোনাভাইরাসের কারণে কোন ধরনের মানুষের মধ্যে মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি হতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, হাত ধুয়ে এবং যাদের কাশি হয়েছে কিম্বা হাঁচি দিচ্ছে তাদেরকে এড়িয়ে চলার মাধ্যমে এই ভাইরাসের আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করা সম্ভব।

নাগরিকত্ব আইন: কলকাতায় প্রবল বিক্ষোভের মুখেও অনড় অমিত শাহ

মাহাথিরকে টপকে যেভাবে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হলেন মুহিইদ্দিন

বীমা করার আগে কী কী বিষয় খেয়াল রাখতে হবে?