অনলাইন ডেস্ক : ধূমপান স্বাস্থের পক্ষে ক্ষতিকারক- এটা নতুন করে বলার কিছু নেই। প্রত্যক্ষ ধূপানের পাশাপাশি ধূমপানের পরোক্ষ (প্যাসিভ স্মোকিং) প্রভাবও মারাত্মক ক্ষতিকর। আর এই পরোক্ষ ধূমপান শিশুদেরও অসুস্থ করে তুলছে।
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, সিগারেট-বিড়ির ধোঁয়ায় রয়েছে প্রায় ১০০টি ক্ষতিকর রাসায়ানিক। এগুলোর মধ্যে ৭০টি রাসায়নিক ক্যানসারের জন্য সরাসরি দায়ী। গর্ভবতী নারীদের ধূমপানের ফলে গর্ভস্থ ভ্রূণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কোনো গর্ভবতী নারীর সামনে বা পাশের ঘরে গিয়ে ধূমপান করলেও ওই সন্তানসম্ভবার শারীরিক ক্ষতির ঝুঁকি থেকে যায়।
আপনি ধূমপান করছেন না অথচ সিগারেট জ্বলছে- এ ক্ষেত্রেও ক্ষতির আশঙ্কা থেকে যায়। কারণ সেই ধোঁয়া সরাসরি বাতাসের সঙ্গে মিশছে। আর সেই বাতাস শরীরে প্রবেশের (সাইড স্ট্রিম) পর শ্বাসনালী আর ফুসফুসকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
শিশুরা খুব দ্রুত শ্বাসপ্রশ্বাস নেয়। তাছাড়া শিশুদের শ্বাসনালী আকারেও অনেক ছোট। ফলে বিড়ি-সিগারেটের ধোঁয়ায় তাদের শ্বাসনালী আর ফুসফুস মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর ফলে তাদের সর্দিকাশি, ব্রঙ্কাইটিস, হাঁপানি ও নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় অনেকটাই।
যে সব বাড়িতে এক বছরের কম বয়সী শিশু রয়েছে, ধূমপানের ক্ষেত্রে তাদের সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কারণ, মা, বাবা বা বাড়ির অন্য সদস্যদের ধূমপানের প্রভাবে শিশুদের মধ্যে ‘অকাল মৃত্যু’র (Sudden infant death syndrome বা SIDS) ঝুঁকি অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, যে সব সন্তানসম্ভবা নারী ধূমপায়ী, তাদের ক্ষেত্রে শিশুমৃত্যুর ঘটনা অধূমপায়ীদের থেকে ৫৮% বেশি। একইভাবে সন্তানসম্ভবা নারীর সামনে বা কাছে ধূমপান সদ্যজাত সন্তানের মৃত্যুর আশঙ্কা অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়।
সচেতন মানুষজন অনেক সময় শিশুর সামনে ধূমপান না করে বাড়ির বারান্দায়, ছাদে বা বাইরে গিয়ে ধূমপান সেরে আসেন। এরপর ঘরে ফিরে শিশুর কাছে যান বা তাকে কোলে নেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, এর ফলেও শিশুর শরীরে সিগারেটের ধোঁয়ার বিষ প্রবেশ করে। ধূমপানের পর জামাকাপড়ে ও ধূমপায়ীর শরীরে বিষাক্ত রাসায়ানিক থেকে যায় কমপক্ষে তিন-চার ঘণ্টা। তাই শিশুর সুস্থ ভবিষ্যতের কথা ভেবে ধূমপান থেকে যতটা সম্ভব বিরত থাকুন। সূত্র: জিনিউজ