দর্পণ ডেস্ক : চলতি বছরে বিশ্বের ৫০০ জন কোটিপতির মধ্যে দু’নম্বরে চলে এসেছেন টেসলা কর্ণধার এলন মাস্ক। প্রতি বছর বিশ্বের কোটিপতিদের তালিকা তৈরি করে যারা, সেই ‘ব্লুমবার্গ বিলিওনেয়ার ইনডেক্স’ সম্প্রতি এই খবর দিয়েছে।
সম্পদের নিরিখে ‘মাইক্রোসফ্ট’ সংস্থার কর্ণধার বিল গেটসকে টপকে সম্প্রতি বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তিদের তালিকায় দু’নম্বরে জায়গা পাকা করে নিয়েছেন তিনি।
বছরের শুরুতে তিনি ছিলেন তালিকার ৩৫ নম্বরে। দুই নম্বরে উঠে আসতে তাকে সাহায্য করেছে সংস্থার উত্তরোত্তর ঊর্ধ্বমুখী শেয়ারের দাম। হু হু করে টেসলা মোটরের শেয়ারের দাম চড়ে যাওয়ায় এলনের মোট সম্পদের পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ১২ হাজার ৭৯০ কোটি ডলার। একটু পিছিয়ে পড়ে গেটসের সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৭৭০ কোটি ডলারে।
এলনের জন্ম ১৯৭১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়ায়। বাবা ছিলেন এক জন বড় মাপের ইঞ্জিনিয়র। মা ছিলেন একজন জনপ্রিয় কানাডিয়ান মডেল। আজ যে খ্যাতি, যে প্রতিপত্তি এলনের, তার ভিত পোঁতা ছিল তার শৈশবেই।
ছোট থেকেই এলন নিত্য নতুন জিনিস আবিষ্কারের কথা ভাবতেন। নানা কিছু দিয়ে পরীক্ষাও করতেন সব সময়। তার কল্পনার মাত্রা ছিল বাঁধনছাড়া। সব সময় এতটাই কল্পনাতে বুঁদ হয়ে থাকতেন যে কারও ডাকে সাড়াও দিতেন না।
একবার তাকে চিকিৎসকের কাছেও নিয়ে যেতে হয়েছিল সে জন্য। অন্য শিশুদের মতো তার স্বাভাবিক আচরণ না থাকার জন্য চিকিৎসক তার ব্রেন থেরাপির পরামর্শও দেন। পরীক্ষা করিয়ে নিতে বলেছিলেন তার শ্রবণশক্তিরও।
এলন যখন মাত্র ১০ বছরের, তার মা-বাবার বিচ্ছেদ হয়ে যায়। সে নিয়ে এতটুকু মাথাব্যথা ছিল না তার। বরং তখন তার মধ্যে কম্পিউটার নিয়ে অনেক বেশি কৌতূহল ছিল।
ওই ১০ বছরেই শিখে ফেলেছিলেন প্রোগ্রামিং। তার দু’বছরের মধ্যে নিজের তৈরি সফটওয়্যার গেম ‘ব্লাস্টার’ বিক্রি করেছিলেন। এটাই ছিল তার জীবনের প্রথম উপার্জন।
১৯৮৯ সালে উচ্চশিক্ষার জন্য এলন কানাডায় চলে যান। ওই বছরই তিনি কানাডার নাগরিকত্ব পান। পরে ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যান্ডফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন পদার্থবিদ্যায় পিএইচডি করার জন্য। কিন্তু সেই পড়াশোনা মাঝপথেই থামিয়ে দেন।
মাত্র দু’দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তার পরই নিজের প্রথম সফটওয়্যার কোম্পানি ‘জিপ ২’ খোলেন। সেটা ছিল ১৯৯৫ সাল। ‘জিপ ২’ ছিল অনলাইন সিটি গাইড কোম্পানি।
এখানেই থেমে থাকেননি। ১৯৯৯ সালে অনলাইন ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস কোম্পানি ‘পেপল’ গড়ে তোলেন।
তার তৃতীয় কোম্পানি ‘স্পেসএক্স’। ২০০২ সালে এই কোম্পানি গড়ে তোলেন তিনি। তার ৬ বছরের মধ্যেই নাসার সঙ্গে যুক্ত হয়ে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাঠাতে শুরু করে তাঁর সংস্থা। ২০০৪ সালে তিনি টেসলা মোটরের সিইও হন।
৩ স্ত্রী এবং এক প্রেমিকার থেকে মোট ৭ সন্তানের বাবা হয়েছেন এলন। তার মধ্যে স্পেসএক্স কর্ণধার নিজের এক ছেলের নাম রেখেছেন X AE A-12 মাস্ক। নাম নিয়ে নেটদুনিয়ায় রসিকতাও হচ্ছে প্রচুর। কেউ বলছেন, ‘এ তো নাম নয়, পাসওয়ার্ড!’ এটা সত্যিকারের নাম না ‘কোডনেম’? তবে এ নাম উচ্চারণ করতে গিয়ে যে দাঁত ভেঙে যাওয়ার জোগাড় হবে— সে ব্যাপারে একমত নেটাগরিকরা।
৩ স্ত্রীর সঙ্গেই বিচ্ছেদ হয়েছে এলনের। তৃতীয় স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় ২০১৬ সালে। তার পর থেকে প্রেমিকা গ্রিমসের সঙ্গেই রয়েছেন তিনি। X AE A-12 মাস্ক প্রেমিকা গ্রিমসেরই ছেলে।