দিবাকর সরকার, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : কলাপাড়ায় ডালবুগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সামান্য বেতন বকেয়া থাকায় অর্ধবার্ষিক ও প্রাক বাছনিক পরিক্ষায় ১৮ শিক্ষার্থীকে অংশগ্রহন করতে না দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। এছারাও সরকারী নিয়মনীতি উপেক্ষা করে নতুন বই বিতরনের সময় পাঁচশত টাকা করে নেয়ার অভিযোগ তুলেছেন ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ অভিভাবক মহল। জানা গেছে ২০১৮ শিক্ষাবর্ষের অর্ধবার্ষিক ও প্রাক বাছনিক পরীক্ষায় ৯ম শ্রেনীর দুই জন দশম শ্রেনীর ১৫ জন এবং ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ১ জন পরীক্ষার্থীর বিদ্যালয়ের বেতন ও সেশন ফি টাকা সামান্য বকেয়া থাকায় ১ জুলাই রোববার থেকে অনুষ্ঠিত অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষায় ইংরেজী প্রথম পত্র পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে অনুমতি দেয়নি বিদ্যালয়ের শিক্ষক মন্ডলী। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, এছাড়াও বই বিতরনের সময় টাকা নেয়া ও অতিরিক্ত ক্লাশের নামেও চলছে রমরমা কোচিং বানিজ্য। শিক্ষার্থীরা জানান অন্যান্য বিদ্যালয়ের চেয়ে ডালবুগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বেতন অনেক বেশি নেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি শিক্ষকদের কথামত অতিরিক্ত ক্লাশের নামে কোচিংয়ে পড়তে না চাইলে পরিধেয় পোশাক খুলে মারধর করার হুমকি দিয়ে থাকেন সহকারী শিক্ষক আনোয়ার হোসেন। ৬ষ্ঠ শ্রেনীর শিক্ষার্থী মমতাজ জানায় তার বাবা একজন ভ্যানচালক , তাকে মাত্র ষাট টাকার জন্য পরীক্ষা দিতে দেয়া হয়নি। ৯ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী সোহাগ গাজী, ৮ম শ্রেনীর হাসিব, আরিফ হোসেন, ৭ম শ্রেনীর নাজমুল, সাকিব, সালমানসহ আরো অনেক শিক্ষর্থী জানায় সকল শিক্ষার্থী সেশন ফি বাদেই ৫ থেকে ৬ শত টাকা দিয়ে নতুন বই নিয়েছেন। বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতির নামেও একদিনে ২০ টাকা করে জরিমানা নেয়া হয় বলেও জানায় শিক্ষার্থীরা। বছরে অর্ধবার্ষিকী এবং বার্ষিক এই দুটি পরিক্ষা নেয়ার বিধান থাকলেও তা উপেক্ষা করে ৩টি করে পরীক্ষা নিচ্ছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এসব কারনে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে অভিভাবক মহল। তারা বলছেন শিক্ষকদের খামখেয়ালীপনা আর অতিরিক্ত চাহিদা এখন চরম পর্যায় পৌছে গেছে। স্থানীয়রা বলেন ১৯৭৩ সালে স্থাপিত এ বিদ্যালয়টির শুনাম এখন দুই তিন জন দুর্নীতিবাজ শিক্ষকের কারনে নষ্ট হতে চলেছে। তবে এসকল অভিযোগ অস্বীকার করে ডালবুগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনিত্ত্য কুমার হাওলাদার জানান, যেসকল পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা দেয়নি তারা ঠিকমত বকেয়া টাকা পরিশোধ করেনি। তাদের পরে ডাকা হয়েছিল কিন্তু তারা আসেনি। পরবর্তীতে তাদের এই একটি পরীক্ষা নেয়া হবে। বই বিতরনে টাকা নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেশন ফি-সহ টাকা নেয়া হয়েছে এবং সেই টাকার রশিদ বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। যারা বলছেন না বুঝেই বলছেন,আর বেতনের বিষয়টি ম্যানেজমেন্ট কর্তৃপক্ষই ধার্য করেছেন। তবে অনুপস্থিতিতে বিশ টাকা করে জরিমানার টাকা কোন খাতে ব্যয় করেন তার কোন সঠিক উত্তর দিতে পারেননি এই শিক্ষক। কলাপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. শহীদ হোসেন জানান, বিষয়গুলো জরুরি ভিত্তিতে তদন্ত করা হবে এবং অভিযোগ প্রমানিত হলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।