দর্পণ ডেস্ক : অর্থ পরিশোধের নতুন একটি ব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে ইরানের সঙ্গে ব্যবসা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ইরানের সঙ্গে সই করা পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র বের হয়ে যাওয়ার পর তেহরানের ওপর ওয়াশিংটন যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে তার জন্য অধিকাংশ ইউরোপীয় কোম্পানি ইরানের সঙ্গে ব্যবসা করা বন্ধ করে দেয়। নতুন ব্যবস্থায় আবারও ব্যবসা শুরু করতে পারবে তারা। তবে এই ব্যবস্থা কী করে কাজ করবে তা এখনো স্পষ্ট নয়।
ইরান ও ইইউর মধ্যে জাতিসংঘে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পর এ ঘোষণা দেয়া হয়। এক যৌথ বিবৃতিতে দেশগুলো জানায়, ‘ইরানের সঙ্গে বৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে এ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’ বিশ্ব বাণিজ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ডলারের প্রাধান্যের কথা মাথায় রেখে এই বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘ইরানের আমদানি-রপ্তানির অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা বৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কােম্পানিগুলোকে সহায়তা ও আশ্বস্ত করবে।’ অর্থাৎ ইরানের সঙ্গে ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারবে ইউরোপীয় কোম্পানিগুলো।
ইইউর পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান ফেদেরিকা মোঘেরিনি জাতিসংঘে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফের সঙ্গে আলোচনার পর এই পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন। এই আলোচনায় পরমাণু চুক্তির যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া বাকি পক্ষ অর্থাৎ ব্রিটেন, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি ও রাশিয়ার প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
মোঘেরিনি বলেন, নতুন আর্থিক বিনিময় ব্যবস্থা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা কাজ করছেন। তবে বিশ্লেষকরা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, নতুন ব্যবস্থা মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্রও তাদের নিষেধাজ্ঞার শর্তে পরিবর্তন আনতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার পর এর দংশন এরই মধ্যে অনুভব করতে শুরু করেছে ইরান।
এ বছরের শুরুর দিকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে সই করা পরমাণু চুক্তি থেকে বের হয়ে যায়। এর পর পরই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন তিনি। জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন নামের এই চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে সই করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। সে সময় একে একটি সাফল্য হিসেবেই বিবেচনা করা হয়েছিল। এই চুক্তিতে ইরানের পরমাণু তৎপরতা সীমিত করার বিনিময়ে তাদের কিছু ছাড় দেয়ার কথা বলা হয়। তবে ট্রাম্পের দৃষ্টিতে এই চুক্তি ‘একপেশে’, ‘বিপর্যয়কর’ এবং এত বাজে চুক্তি তিনি ‘পুরো জীবনে আর কখনো দেখেননি’। সূত্র : এএফপি, বিবিসি।