উত্তরাঞ্চলের রংপুর ও নীলফামারী জেলায় গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে। এ জন্য প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে পার্বতীপুরের রেলওয়ে হেড ডিপো পরিদর্শনে এসে এ কথা বলেন জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আনিছুর রহমান।
তিনি বলেন, গ্যাস লাইন বগুড়া পর্যন্ত আছে। ওই লাইন রংপুর ও নীলফামারীর ইপিজেড পর্যন্ত নেওয়া হবে।
পরে তিনি ৫২০ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপ লাইন নির্মাণ কজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন। এ সময় ছিলেন প্রকল্প পরিচালক টিপু সুলতান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহনাজ মিথুন মুন্নী, পদ্মা ওয়েলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদুর রহমান, মেঘনার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মীর সাইফুল্লাহ আল খালেদ, যমুনার ব্যবস্থাপনা পরিচালক গিয়াস উদ্দীন আনসারী, মধ্যপাড়া কঠিন শিলা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম কামরুজ্জামান, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী কামরুজ্জামান প্রমুখ।
জানা গেছে, উত্তরাঞ্চলের পার্বতীপুর রেলওয়ে হেড ডিপোতে জ্বালানি তেল রেলের ট্যাঙ্ক ওয়াগানে পরিবহন করা হয়। আমদানিকৃত, ইস্টার্ন লিমিটেড এবং স্থানীয় অন্যান্য উৎস হতে প্রাপ্ত জ্বালানি তেল চট্টগ্রামের প্রধান স্থাপনায় মজুদ করা হয়। সেখান থেকে পানি পথে দৌলতপুর ডিপো ও খুলনা পাঠানো হয়। সেখান থেকে ট্যাঙ্ক ওয়াগানের মাধ্যমে পার্বতীপুরের রেল হেড ডিপোতে পাঠানো হয়। এতে সময় লাগে কমপক্ষে ৭ দিন। তাছাড়া এ ভাবে তেল পরিবহন করা ব্যয়বহুল এবং ঝুকিপূর্ণ। ফলে সরকার ভারত থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে তেল আমদানির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ভারতের নুমালীগড় হতে শিলিগুঁড়ি রেল টার্মিনাল পর্যন্ত ৬০ কিলোমিটার পাইপ লাইন রয়েছে। এখন শিলিগুঁড়ি মার্কেটিং টার্মিনাল হতে পার্বতীপুর পর্যন্ত ১৩০ কিলোমিটার পাইপ লাইন নির্মান করা হবে। এর মধ্যে ভারত অংশে ৫ কিলোমিটার ও বাংলাদেশ অংশে ১২৫ কিলোমিটার। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ভারত সরকার দেবে ৩০৩ কোটি রুপি ও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন দেবে ১৫০ কোটি টাকা। ১০ ইঞ্চি ব্যাসের এই পাইপ দিয়ে বছরে ১০ লাখ মেট্রিক টন ডিজেল পরিবহন করা সম্ভব হবে।
পদ্মা ওয়েলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল্লাহ আল মামুন খালেদ জানান, ইতোমধ্যে ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়েছে। পাইপলাইন নির্মিত হলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ভারত থেকে পার্বতীপুর রেলহেড পিওএল ডিপোতে জ্বালানি তেল (ডিজেল) চলে আসবে। আর এখান থেকে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ১৬ জেলায় তা সরবরাহ করা হবে। এতে করে একদিকে সময় লাগবে কম, অপরদিকে পরিবহন ব্যয় ও সিস্টেমলস অনেক কমে যাবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে যে প্রক্রিয়ায় বিদেশ থেকে জ্বালানি তেল আমদানি করা হয়, তাতে পার্বতীপুরে পৌঁছাতে সময় লাগে প্রায় এক মাস। ২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাইপ লাইন নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরে গত বছরের ২৯ নভেম্বর কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন ভারতীয় হাই কমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাশ।