দর্পণ ডেস্ক : বৈশ্বিক মহামারি করোনা চরম আঘাত হেনেছে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই দেশটিতে স্বাভাবিক চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। দেশজুড়ে ডাকা হয় লকডাউন। ফলে দেশটির অর্থনীতিতে ফেব্রুয়ারির চেয়ে মার্চে রেকর্ড ৫.৮ শতাংশ ধস হয়। বুধবার এ তথ্য জানায় দেশটির জাতীয় পরিসংখ্যান বিভাগ। রয়টার্স
জাতীয় পরিসংখ্যান কার্যালয় (ওএনএস) বলছে, ‘ঐতিহাসিক’ এই সংকোচন দৃশ্যত সব ধরনের অর্থনৈতিক কার্যক্রমের ওপর প্রভাব ফেলেছে। ২০০৮ ও ২০০৯ সালের মন্দার সময় দেশের অর্থনীতি যতটা সংকুচিত হয়েছিল এবারের এই সংকোচন তার চেয়ে তিনগুণ বেশি বলে জানানো হয়েছে।
করোনাভাইরাসের কারণে ব্রিটিশ অর্থনীতি গত এপ্রিলে ২০ দশমিক ৪ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। মাসিক হিসেবে দেশটিতে এটি সর্বোচ্চ সংকোচনের রেকর্ড। এপ্রিলে মাসজুড়ে যুক্তরাজ্যে লকডাউন সংক্রান্ত বিধিনিষেধ আরোপ থাকায় ওই মাসে সংকোচন বেশি বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এপ্রিলের অবস্থা যে সবচেয়ে খারাপ হবে তা জানা ছিল; কারণ মে থেকে সরকার লকডাউন সংক্রান্ত বিধিনিষেধগুলো শিথিল করতে শুরু করে। ওএনএস ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের যে হিসাব দিয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, আগের বছরের তুলনায় তা ১০ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি সংকুচিত হয়েছে।
ওএনএস এর অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান বিভাগের সহকারী জাতীয় পরিসংখ্যানবিদ জোনাথন অ্যাথো বলেন, ‘এপ্রিলে যুক্তরাজ্যের জিডিপির (মোট জাতীয় উৎপাদন) পতন সর্বকালের সবচেয়ে বড়, যা গত মাসের চেয়ে তিনগুণ এবং কোভিড-১৯ পরিস্থিতির আগের অবস্থার চেয়ে প্রায় দশগুণ বেশি।’
তিনি বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির চেয়ে এপ্রিলে দেশের অর্থনীতি প্রায় ২৫ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। দৃশ্যত অর্থনীতির প্রতিটি খাতেই মারাত্মকভাবে প্রভাব তৈরি করেছে। এরমধ্যে পাবস, স্বাস্থ্য, গাড়ি বিক্রির মতো খাতগুলো। অর্থনীতির এই ঐতিহাসিক সংকোচনে এসব খাতের অবদান ছিল সবচেয়ে বেশি।’
অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেন, ‘অন্যান্য অনেক দেশের মতো করোনাভাইরাস আমাদের অর্থনীতিতেও মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। তবে স্কিম, অনুদান, ঋণ এবং কর হ্রাসসহ যে লাইফলাইন আমরা সরকারের পক্ষ থেকে সরবরাহ করেছি তা হাজার হাজার ব্যবসায়ীকে এবং কয়েক মিলিয়ন চাকরি বাঁচিয়েছে।’