দিবাকর সরকার, কলাপাড়া প্রতিনিধি : অস্বাভাবিক জোয়ারের চাপে নিজকাটা আট ভেন্টের বিধ্বস্ত স্লুইসটির বাঁধ ভেসে এখন ভেতরে পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হচ্ছে জনপদ। শনিবারের জলোচ্ছ্বাসের ঝাপটা পুরোটা ঠেকাতে পারেনি মানুষ। কিন্তু আজ রোববার সকাল থেকে স্থানীয় মানুষ নিজেদের শ্রম ও অন্য জায়গা দিয়ে মাটি এনে কোনমতে প্রতিরোধ করা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু ভেতরে পানির প্রবেশ পুরোটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না। ফলে সবজিসহ একাধিক ধানের ফলন পাওয়া জনপদ নীলগঞ্জের অন্তত ১২টি গ্রামের তিন হাজার কৃষক পরিবারের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে।

তাদের বাড়িঘর, ফসলাদিসহ কৃষিজমি সব পানিতে ভেসে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের নিজকাটা, চাঁদপাশা, মকিমপুর, টুঙ্গিবাড়িয়া, গুটাবাছা, নবীপুর, হোসেনপুর, পশ্চিম সোনাতলাসহ ১২টি গ্রামের কৃষক পরিবারে এখন সব হারানো আতঙ্ক বিরাজ করছে।

অহিদ মাঝি জানান, এই স্লুইসটি ৭/৮ বছর আগে থেকে নষ্ট হতে থাকে। চার বছর আগে দেবে যায়। এরপর দুই বছর আগে ভেঙ্গে গেছে। কোনমতে মাটি ভরাট করে তারা খালে বাঁধ দিয়ে লোনা পানির প্রবেশ ঠেকিয়েছেন। অনেক দেন-দরবার করার পরে এক মাস আগে কনট্রাক্টর মেরামতের কাজ শুরু করে। তাও মূল ভাল বেড়িবাঁধের মাটি কেটে দেয় ভাঙ্গন এলাকায়। কিন্তু এখন সাত দিন ধরে কাজ বন্ধ রয়েছে। ফলে স্থানীয়রা এখন চরম সঙ্কটে পড়েছেন। তারা অস্বাভাবিক জোয়ারের প্লাবনে প্লাবিত হওয়ার শঙ্কায় চরম শঙ্কিত হয়ে আছেন। জলোচ্ছ্বাস ঠেকাতে শনিবার ৪০-৫০ জন লেবার নিয়ে স্থানীয়রা কাজ করেছেন। ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আজ রোববারও অন্তত ত্রিশ হাজার টাকা ধার করে মাটি সংগ্রহ করে জোয়ারে ঝাপটা ঠেকানোর কাজ করছেন গ্রামবাসী। অহিদ মাঝি জানান ইতিপুর্বে প্রত্যেক জোতে তার গড়ে ছয়-সাত হাজার টাকা খরচ করতে হয়েছে পানির প্লাবন থেকে জনপদ রক্ষায়। পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আবুল খায়ের জানান, ছয় লাখ টাকা ব্যয়-বরাদ্দে একজন ঠিকাদার বিধ্বস্ত স্লুইসসহ বেড়িবাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করেছে। যা চলমান রয়েছে। তবে কাজ বন্ধের বিষয় তিনি খবর নিচ্ছেন বলেও জানান।