দর্পণ ডেস্ক : প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ‘কুখ্যাত’ গুপ্তচর ছিলেন মাতা হারি। এই সুন্দরী গুপ্তচর তার প্রেমিককে বেশ কয়েকটি চিঠি লিখেছিলেন। এমন বিরল এক চিঠি সম্প্রতি লস অ্যাঞ্জেলস অকশনে বিক্রি হয়েছে ১৫ হাজার ডলারে।

তার জন্ম ১৮৭৬ সালে। নেদারল্যান্ডসের মার্গারিথা জিলে-তে। তিনি ছিলেন এক আবেদনময়ী বারবনিতা ও নৃত্যশিল্পী। মঞ্চে তার নাম ছিল মাতা হারি। যুদ্ধের সময় তাকে গুপ্তচরবৃত্তির কাজে নিয়োজিত করে ফ্রান্স। জার্মানির বিরুদ্ধে কাজ করেন তিনি। পরে অবশ্য ডাবল এজেন্ট হিসেবে অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।

তাকে প্যারিস থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ১৯১৭ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারিতে। ওই বছরই ২৪ জুলাই বিচারকার্য বসে তার। জার্মানিদের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ ওঠে। আর ৫০ হাজার সেনার মৃত্যুর দায়ে অভিযুক্ত করা হয় তাকে। ১৯১৭ সালের ১৫ অক্টোবর ফ্রেঞ্চ ফায়ারিং স্কোয়াডে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। ঐতিহাসিকরা মনে করেন, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ফ্রান্স তার কারণেই ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। মৃত্যুদণ্ড ছিল তারই শাস্তি।

ডাচ শিল্পী পিয়েত ভ্যান ডার হেম ছিলেন এই ‘কুখ্যাত’ গুপ্তচরের প্রেমিক। সিক্রেট এজেন্টের মনের ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে খুঁজে পাওয়া ১০টি চিঠিতে। এগুলো লেখা হয়েছিল ১৯১৪ থেকে ১৯১৫ সালের মধ্যে। এগুলো ন্যাট ডি স্যান্ডার্স অকশনে তোলা হয়। সবগুলো চিঠি লেখা হয়েছিল আমস্টারডামের ভিক্টোরিয়া হোটেলে বসে। যুদ্ধের শুরুর দিকেই বার্লিন থেকে নিরপেক্ষ হল্যান্ডে পাড়ি জমান হারি। চিঠিতে তিনি নৃত্যশিল্পী হিসেবে কাজ পাওয়ার কথা লিখেছেন। ডাচরা তার নৃত্যের স্টাইল কীভাবে দেখে তা জানিয়েছেন। তিনি চিঠিতে আরো জানিয়েছেন যে, ধনী ব্যাংকার উইল ভ্যান ডার শাল্ক তার হোটেলে থাকার সব খরচ বহন করেন।

সাতটি চিঠি লেখা হয়েছে ফ্রেঞ্চ ভাষায়। বাকি তিনটি ডাচ ভাষায়। চিঠি পড়ে বোঝা যায়, ‘কেবলমাত্র তুমি যা তার জন্যেই’ পিয়েত ভ্যান ডার হেমকে ভালোবেসে ছিলেন মাতা হারি। নৃত্যশিল্পীর সঙ্গে হেম যে বিনোদন করেছিলেন তার জন্যে প্রেমিককে ক্ষমা করেছেন বলে জানান চিঠিতে। আবার অন্য চিঠিতে এও লিখেছেন যে, তিনি প্রেমিকের ওপর কোনো ‘প্রতিশোধ’ নিতে চান না।