মনিকার সঙ্গে ক্লিনটন

‘সেই সম্পর্কের কারণে মনিকার জীবন বিশেষভাবে চিহ্নিত হয়েছে, ভাবতেও খুব খারাপ লাগে। বছরের পর বছর আমি দেখতে চেয়েছি সে যেন একটি স্বাভাবিক জীবন ফিরে পায়’

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন দাবি করেছেন, মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমানোর উপায় হিসাবেই মনিকা লিওনস্কির সঙ্গে তার সম্পর্ক হয়েছিলো। “হিলারি” নামের একটি ধারাবাহিক তথ্যচিত্রের অংশ হিসাবে ওই মন্তব্য করেন তিনি। ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের জীবন নিয়ে ওই তথ্যচিত্রটি তৈরি করা হয়েছে। এক প্রতিবেদনে এসব খবর জানিয়েছে বিবিসি।

মনিকা লিওনস্কির সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে তদন্তকারীদের কাছে মিথ্যা বলার অভিযোগে ১৯৯৮ সালে বিল ক্লিনটনকে অভিশংসিত করা হয়। যদিও পরে সিনেটের শুনানিতে তিনি রেহাই পান। তাদের ওই সম্পর্কের সময় মনিকা ছিলেন হোয়াইট হাউজে ২২ বছর বয়সী একজন শিক্ষানবিশ।

মার্কিন টেলিভিশন নেটওয়ার্ক ও তথ্যচিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান “হুলু”কে ক্লিনটন বলেন, ”আমি যা করেছি তা খারাপ ছিলো। তবে কাজটা আমি ভেবেচিন্তে করেছি, এরকমটি ছিল না।”

”আপনি নিজেকে একটা দোদুল্যমান অবস্থায় দেখতে পাবেন.. আপনি হয়তো ১৫ রাউন্ডের লড়াইয়ের জন্য নেমেছেন, তারপর দেখতে পেলেন সেটা ৩০ রাউন্ডের লড়াই হয়ে গেছে। এরপর আপনার সামনে এমন কিছু এলো, সবকিছু থেকে আপনার চিন্তাভাবনা সরিয়ে নিতে পারলেন। সবার জীবনেই চাপ রয়েছে, অসন্তোষ ও ভীতি ইত্যাদি রয়েছে.. বছরের পর বছর ধরে চলা মানসিক চাপ, উদ্বেগ সামলাতে আমি সেসব কাজ করেছি।”

১৯৯০ এর দশকের শেষদিকে প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন মনিকা লিওনস্কির সঙ্গে তার সম্পর্কের বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে প্রধান খবর হয়ে ওঠে। প্রথমে ওই সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেন ক্লিনটন। তবে পরবর্তীতে স্বীকার করেন যে, তারসঙ্গে “অসঙ্গত ঘনিষ্ঠ শারীরিক সংস্পর্শ” হয়েছিলো।

১৯৯৮ সালে মার্কিন গণমাধ্যমে এসংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হওয়ার পর ক্লিনটনের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া ছিল, “ওই নারীর সঙ্গে আমার কোন যৌনসম্পর্ক ছিল না।”

অন্যদিকে মনিকা উল্লেখ করেন, সাবেক প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার সম্পর্ক পারস্পরিক সম্মতিতে হয়েছে কিন্তু তিনি একে “ক্ষমতার চরম অপব্যবহার” বলেও বর্ণনা করেছেন।

২০১৪ সালে ভ্যানিটি ফেয়ার পত্রিকাকে মনিকা বলেন, ”তার ‘শক্তিশালী অবস্থান’ রক্ষার জন্য যখন আমাকে একটি বলির পাঠা বানানো হয়েছিল তখন কোনও ‘আপত্তি’ আসেনি…।”

তথ্যচিত্রে ক্লিনটন আরও বলেন, “সেই সম্পর্কের কারণে মনিকার জীবন বিশেষভাবে চিহ্নিত হয়েছে, ভাবতেও খুব খারাপ লাগে। বছরের পর বছর ধরে আমি দেখতে চেয়েছি সে যেন একটি স্বাভাবিক জীবন ফিরে পায়। যদিও ‘স্বাভাবিক জীবনে’র মানে একেকজনের কাছে একেকরকম।”