ভোক্তা অধিকার ও ক্যারিয়ার ফেস্টিভ্যাল-২০২০

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের মুক্তমঞ্চে এ  ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠিত হয়

মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) প্রায় ১ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রশিক্ষণমূলক অনুষ্ঠান “ভোক্তা অধিকার ও ক্যারিয়ার ফেস্টিভ্যাল-২০২০”। 

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের মুক্তমঞ্চে ফেস্টিভ্যালটি অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য  ড. মো. শাহজাহান বলেন, “খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধে জনসচেতনা তৈরিতে সিওয়াইবি’র এই কাজকে আমি সাধুবাদ জানাই। আমাদের নতুন প্রজন্মকে সুস্থ ও সুন্দর পরিবেশ গড়ে দিতে নিজেদের সচেতন হবার বিকল্প নেই। আগামীদিনে শাখা সিওয়াইবি’র সার্বিক কর্মকাণ্ডে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পাশে থাকবে। আমি সিওয়াইবি’র উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছি।”

জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় উপপরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, “ভোক্তা হিসেবে আমাদের সকল অধিকার বুঝে নিতে হবে। সমাজের সচেতন মানুষদের দলে যোগ দিতে হবে। নিজে ভাল মানুষ হতে হবে। নীতি-নৈতিকতা সম্মপন্ন বিবেকের অধিকারী হতে হবে সকলকে।”

“কনসাস কনজুমার্স সোসাইটি”র (সিসিএস) নির্বাহী পরিচালক ও “কনজুমার ইয়ুথ বাংলাদেশ”এর (সিওয়াইবি) কেন্দ্রীয় সভাপতি পলাশ মাহমুদ বলেন, ক্যারিয়ার গঠনে শুধু চাকরিকেন্দ্রীক চিন্তা থেকে শিক্ষার্থীদের বের হয়ে আসতে হবে। সৃজনশীল উদ্যোক্তা হতে হবে শিক্ষার্থীদের থেকে। নিজের অধিকার বাস্তবায়নে ও দেশে খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। 

অনুষ্ঠানের প্রথমপর্বে প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন ন্যাশনাল ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট ফোরাম’এর সভাপতি কে এম হাসান রিপন, ব্রাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষক এম এইচ এম মুবাশশির, বিডি জবস ডটকমের সিনিয়র ম্যানেজার মোহাম্মদ আলী ফিরোজ, ই-ভ্যালি-এর সিনিয়র ম্যানেজার (অপারেশন অ্যান্ড আইআর) আব্দুল্লাহ আল মামুন, আউটস্পোকেন’র প্রতিষ্ঠাতা আফজাল হোসাইন, ব্রাক ব্যাংকের সিনিয়র কর্মকর্তা মেহেনাজ আক্তার প্রমুখ।

প্রথমপর্বে ঢাকা থেকে আগত প্রশিক্ষকরা ভোক্তা অধিকার আইন-২০০৯ এর ওপর বিস্তারিত ধারণা দেওয়া, শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার বিষয়ে সিভি লিখন, ইংরেজি শিক্ষা, বিদেশে উচ্চ শিক্ষা, চাকরির ও ভাইভার প্রস্তুতি এবং ই-কমার্সে ভোক্তার নিরাপত্তার কলাকৌশলসহ নানা বিষয়ে আলোচনা করেন।

শাখা সিওয়াইবির সভাপতি ও অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক তারিক লিটুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. শাহজাহান। প্রধান বক্তা হিসেবে ছিলেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় উপপরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার, সম্মানিত অতিথি হিসেবে শেয়ার অ্যান্ড কেয়ার-এর সিইও ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে সিসিএস’এর নির্বাহী পরিচালক ও সিওয়াইবির কেন্দ্রীয় সভাপতি পলাশ মাহমুদ, সিওয়াইবির গোপালগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উপদেষ্টা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শফিকুল ইসলাম ও মো. আবদুর রহমান, সিওয়াইবির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সোহরাওয়ার্দী শুভ, যুগ্ম-সম্পাদক ইমরান শুভ্র, ডিএনসিআরপির গোপালগঞ্জ জেলার সহকারী পরিচালক শামীম হাসান,  মানিকগঞ্জ জেলার সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান রুমেল, রাজবাড়ী জেলার সহকারী পরিচালক মো. শরিফুল ইসলাম, ফরিদপুর জেলার সহকারী পরিচালক মো. সোহেল শেখসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ই-কর্মাস প্রতিষ্ঠান “ই-ভ্যালি”র সহায়তায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের (ডিএনসিআরপি) ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে সিসিএস ও এর যুব শাখা সিওয়াইবি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠান বাস্তবায়নে ছিল সিওয়াইবির গোপালগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। এতে ফুড পার্টনার হিসেবে “অলটাইম” ও মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিল দৈনিক বণিকবার্তা।

অনুষ্ঠানে গোপালগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিএল কলেজ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু কলেজ, হাজী লাল মিয়া সিটি কলেজ, বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজসহ প্রায় ১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে “বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর”এর (বিএনসিসি) সুন্দরবন রেজিমেন্টের গোপালগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় সদস্য, ক্যাম্পাসের রোভার স্কাউটের সদস্য, ফটোগ্রাফি সোসাইটি, ফিল্ম সোসাইটি, ভয়েস অব ৫৫ (অনলাইন রেডিও), প্রেসক্লাব ও সাংবাদিক সমিতি সার্বিক সহায়তা করে।

ফেস্টিভ্যাল শেষে অংশগ্রহণকারীদের ডিএনসিআরপি ও সিসিএসের পক্ষ থেকে যৌথ সনদ দেওয়া হয়। এছাড়া সিওয়াইবির ২০ জন সক্রিয় সদস্য পান লিডারশিপ সনদ। একইসঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীর ওপর অনুষ্ঠিত হয় কুইজ প্রতিযাগিতা। এতে তিনটি মোবাইল ফোনসহ মোট ১৮ জনকে পুরস্কার দেওয়া হয়।