বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান সরকারের সময়ে আটবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। পাওয়ার প্ল্যান্টের নামে সরকার যে লুটপাট করেছে, তার ভর্তুকি দেওয়ার জন্য লুটপাটের সমন্বয় করতে এখন আবার জনগণের পকেট কাটতেই বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই সরকার বিদেশে হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। বিদ্যুৎ-পানির দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসলে জনগণের যে উত্তাল তরঙ্গ সৃষ্টি হবে সে আন্দোলনে সরকার ভেসে যাবে।

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিদ্যুৎ ও পানির মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আয়োজিত বিএনপির মানববন্ধনে তিনি এসব বলেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এ সরকারের আমলে পানির দাম কমপক্ষে দশবার বেড়েছে। কিন্তু সেই পানি মুখে দেওয়া যায় না, খাওয়া যায় না। বিদ্যুতের নামে কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট করে সব লুট করছে, তাদের ভর্তুকি দেওয়ার জন্য জনগণের পকেট কেটে তারা বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে। তাদের করা চুক্তিগুলোয় যদি কোনো পাওয়ার প্ল্যান্ট বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে না পারে তারপরও তাকে পয়সা দিতে হবে। প্রতিবছর তাদের ৫১ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, যখন দ্রব্যমূল্য বাড়ছে, চালের দাম বাড়ছে, পেঁয়াজের দাম বাড়ছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ছে, লবনের দাম বাড়ছে, কাঁপড়ের দাম বাড়ছে, বাড়ি ভাড়া বাড়ছে তখন আবার এই বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে, পানির দাম বাড়িয়ে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষকে চরম অসহায়াত্বের মধ্যে ফেলে দিয়েছে এই সরকার।

সরকারের পররাষ্ট্র নীতির সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন যে, ভারত আর আমাদের সম্পর্ক হচ্ছে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মতো যদি এতো ভালো সম্পর্ক হয় তাহলে এনআরসি তৈরি করে বাংলাভাষীদের জোর করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে দেবে কেন। আর আমাদের সরকার এখনো বলছে যে, এটা তাদের অভ্যন্তরীন বিষয়। কারণ এরা নতজানু সরকার, পুতুল সরকার।

তিনি বলেন, যুদ্ধ করে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি। আমাদেরকে অবশ্যই রুখে দাঁড়াতে হবে, আমাদেরকে জেগে উঠতে হবে। আসুন আমরা সবাই জেগে উঠি। আমরা এই ভয়াবহ দানবকে পরাভুত করি এবং জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা করি- এই হোক আমাদের শপথ।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, এই সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার কায়েম করতে হলে আমাদেরকে রাজপথে থাকতে হবে, আমরা রাজপথে আছি, রাজপথে থাকবো- এটাই হোক আমাদের শপথ।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের পরিচালনায় মানববন্ধনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।