ব্রাহ্মণবাড়িয়া

রোবটটি রোগীর শরীরের তাপমাত্রা, হার্টবিট, রক্তচাপ পরিমাপসহ বেশকিছু রোগ নির্ণয় করতে সক্ষম

চিকিৎসকের বিকল্প হিসেবে রোবটের ব্যবহার বাংলাদেশে একেবারে নতুন ধারণা। এ ধারণা থেকেই দেশে এই প্রথমবারের মতো ইলেক্ট্রোমেডিকেল রোবট তৈরি করছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাঁচ শিক্ষার্থী। এ ধরণের রোবট বানাতে সফল হওয়ায় বিষয়টি ইতোমধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেক্ট্রোমেডিকেল টেকনোলজি বিভাগের অষ্টম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. আশিকুর রহমান, মো.

আনাসুর রহমান জানান, ইলেক্ট্রোমেডিকেল টেকনোলজি বিভাগের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো রোবটটি তারা বানিয়েছেন। তারা রোবটটির নাম দিয়েছেন নিজ বিভাগের নাম অনুযায়ী “মিস্টার ইলেক্ট্রোমেডিকেল”। মাত্র ১৫ দিনে এই রোবটটি বানিয়েছেন তারা। রোবটটি রোগীর শরীরের তাপমাত্রা, হার্টবিট, রক্তচাপ পরিমাপসহ বেশকিছু রোগ নির্ণয় করতে সক্ষম। এছাড়া বিভিন্ন সেন্সরের মাধ্যমে চাকার সাহায্যে একপাশ থেকে অন্যপাশে যেতে পারে এবং যে কোনো কথা বলে জবাবে পাল্টা উত্তরও দিতে পারে রোবটটি।

নির্মাতারা জানান, প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে রোবটটিতে নামমাত্র মূল্যের ডিভাইস ব্যবহার করা হয়েছে। এখনো বেশ কিছু কাজ বাকি আছে। প্রয়োজনীয় অর্থের যোগান পেলে পুরো কাজটি শেষ করা সম্ভব হবে। তারা গভীর আত্নবিশ্বাস নিয়ে বলেন, “বিদেশ নয়। দেশের ছেলেরাই যে কোনো রোবট বানাতে সক্ষম।”

রোবট নির্মাতা শিক্ষার্থীরা। ঢাকা ট্রিবিউন 

এদিকে রোবট বানানোর কাজে প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করেছেন ইলেক্ট্রোমেডিকেল টেকনোলজি বিভাগের জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর (শিক্ষক) মো. আবুল কাশেম জানান, দেশের ইতিহাসে এটি প্রথম ইলেক্ট্রোমেডিকেল রোবট। রোবটটির বানাতে খরচ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। এই টাকার বেশিরভাগই যোগান দিয়েছেন ইলেক্ট্রোমেডিকেল বিভাগের সকল শিক্ষার্থীরা। অল্প কিছু টাকা দিয়ে সহযোগীতা করেছে ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, সারাদেশের ৪৯টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মধ্যে শুধুমাত্র নয়টিতে ইলেক্ট্রোমেডিকেল টেকনোলজি বিভাগ চালু রয়েছে। এই বিভাগের শিক্ষার্থীরা মেডিকেল সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজটি করে থাকেন। ২০০৫ সাল থেকে এই বিভাগটি চালু হলেও এখনও পর্যন্ত পাশ করে বের হওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারিভাবে কোনো কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা হয়নি।

তিনি বলেন, “মিস্টার ইলেক্ট্রোমেডিকেলকে আরও উন্নত করার জন্য প্রচেষ্টা চলছে। প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা পেলে মিস্টার ইলেক্ট্রোমেডিকেল দেশের তৈরি প্রথম মেডিকেল রোবট হবে।”

এক প্রশ্নের জবাবে আবুল কালাম আজাদ বলেন, “কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার একটি রোবট (সোফিয়া) নিয়ে সারা দেশে সাড়া পড়েছিল। প্রয়োজনীয় অর্থের যোগান পেলে আমাদের ছেলেরাও এ ধরনের রোবট তৈরি করতে সক্ষম।