নির্বাচনের দুই দিন পর রাজধানীর কিছু কিছু এলাকায় সিটি কর্পোরেশন থেকে পোস্টার অপসারণের কাজ শুরু হলেও এখন আর নেই তৎপরতা। 

এদিকে সিটি কর্পোরেশন থেকে বলা হচ্ছে নির্বাচনী পোস্টার অপসারণের কাজ শেষ করা হয়েছে। অন্যদিকে পরিবেশবাদি সংগঠন সংশ্লিষ্টদের মতে সিটি কর্পোরেশন পোস্টার অপসারণ নিয়ে আইওয়াশ করছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর রাস্তার ড্রেনের ভেতর পোস্টার পড়ে তা বন্ধ হয়ে গেছে। কোথাও আবার স্তুপাকারে জমা করে রাখা হয়েছে পোস্টার। বৈদ্যুতিক খাম্বায় এখনো ঝুলছে অসংখ্য পোস্টার। যার প্রায় সবই লেমিনেটেড। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসব পোস্টার অপসারণ করা না হলে নাজুক অবস্থায় থাকা ড্রেনগুলো পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই ড্রেন উপচে রাস্তাঘাট ময়লা পানিতে সয়লাব হয়ে যাবে। যা বাড়াবে মশার উপদ্রব।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, নির্বাচনের পরদিন অর্থাৎ ২ ফেব্রুয়ারি রোববার থেকেই তারা পোস্টার অপসারণের কাজ শুরু করেছেন। যা একটানা চলে বুধবার শেষ হয়। পোস্টার অপসারণের জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে টিম গঠন করা হয়। প্রতি ওয়ার্ডে  ৩ থেকে ৪টি এবং বড় ওয়ার্ডে ৫টি টিম গঠন করা হয়। প্রতি টিমে ৫ থেকে ৬ জন করে কাজ করেন।

ড্রেন ও রাস্তায় এখনো পোস্টার পড়ে আছে- এ বিষয়ে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, সামান্য কিছু কাজ এখনো বাকি আছে। ইলেকট্রিকের খাম্বাসহ বিভিন্ন জায়গায় দড়িতে পোস্টার ঝুলছে এখনো। তবে সেগুলো নিয়মিত কাজের সঙ্গে অপসারণ করা হবে। 

এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা আরো জানান, দক্ষিণ সিটিতে তারা দুই থেকে আড়াই হাজার টন পোস্টার অপসারণ করেছেন। যা মাতুয়াইল ল্যান্ড ফিল্ডের মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে। 

এদিকে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) সাধারণ সম্পাদক ও পরিবেশ অধিদফতরের সাবেক সচিব ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সোবহান ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, পোস্টার অপসারণ নিয়ে সিটি কর্পোরেশন আইওয়াশ করছে। তারা প্রধার সড়কগুলো থেকে পোস্টার অপসারণ করলেও সব অলি-গলি থেকে তা করেনি। আবার অনেক জায়গায় ঝুলানো পোস্টার অপসারণ করতে গিয়ে যেসব পোস্টার রাস্তায় পড়েছে, তা আর অপসারণ করেনি। সেগুলো রাস্তার পাশে ফুটপাতে কিংবা ড্রেনে পড়ে আছে। তারা আংশিক কাজ করেছে। 

তিনি আরো বলেন, সামনে বর্ষা মৌসুমে এসব পোস্টার তীব্র্র জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করবে। এতে মশার উপদ্রব বাড়াবে। তাই দ্রুত পোস্টার অপসারণের তাগিদ দেন তিনি।  

এই পরিবেশবিদের মতে, নির্বাচনের আগেই নির্বাচন কমিশন লেমিনেটেড পোস্টার ব্যবহার না করার নির্দেশনা দিতে পারতো। সেজন্য তাদেরকে আচরণ বিধি পরিবর্তনও করতে হতো না। কেননা আইনেই পলিথিন ব্যবহার নিষেদ্ধের কথা বলা আছে। আগামীতে যে কোনো নির্বাচনে এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানান তিনি।

পবার হিসাবমতে, ১ ফ্রেব্রুয়ারি শেষ হওয়া দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ন্যূনতম ২ কোটি ৪০ লাখ ৫০ হাজারটি লেমিনেটেড পোস্টার ব্যবহৃত হয়েছে। যা থেকে কমপক্ষে ৬০ হাজার ১২৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন বর্জ্য তৈরি হয়েছে।