বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) দুই সাংবাদিক দীপু সারোয়ার ও ইমরান হোসেন সুমনকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আপত্তিকর ভাষায় চিঠির প্রতিবাদে প্রতিবাদ ও মানববন্ধন করেছে সাংবাদিকরা। অবিলম্বে চিঠি প্রত্যাহার না করলে সব সাংবাদিক সংগঠন এক হয়ে বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হবে বলে সাংবাদিক নেতারা জানিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ের প্রধান গেটের সামনে প্রতিবাদ ও মানববন্ধন করে ক্র্যাবের সদস্য ও অন্যান্য সংঠনের সাংবাদিকরা। ক্র্যাবের আয়োজনে এ প্রতিবাদ ও মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
এ সময় ক্র্যাবের সভাপতি আবুল খায়ের বলেন, ‘যারা বেশি অনিয়ম করে তাদের মাথা ঠিক থাকে না। দুদক কর্মকর্তাদের সেই অবস্থা হয়েছে। তারা চিঠি দেওয়ার ভদ্রতা জানে না। এইভাবে চিঠি দেওয়ার উদ্দেশ্য কি দুদক চেয়ারম্যানকে তার জবাব দিতে হবে। চেয়ারম্যানকে বলতে হবে এই তদন্তকারী কর্মকর্তা কী উদ্দেশ্যে এ ধরনের চিঠি ইস্যু করেছে। আমাদের দাবি দুদকের এই কর্মকর্তাকে দুদক থেকে সরিয়ে দিতে হবে এবং অবিলম্বে এই চিঠির প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় সাংবাদিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে একসঙ্গে বসে আমরা বৃহত্তর কর্মসূচির প্রস্তুতি নেব।’
এ সময় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘আজকের দুদকের যে সুনাম তা একমাত্র গণমাধ্যমের কারণে। একসময় যখন দুর্নীতি দমন ব্যুরো ছিল, তখন এই প্রতিষ্ঠানটি পাপাচারে পূর্ণ ছিল। পাপ মোচন করতে তাদের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। এরপর একমাত্র আমাদের পজিটিভ সাংবাদিকতার কারণেই দুদকের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। কিন্তু এই চিঠি আজকে আবারও প্রমাণ করল যে, কয়লা ধুলে ময়লা যায় না। এই চিঠি অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।’
ডিআরইউ’র সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘দুদক কাদের বিরুদ্ধে কাজ করে? যারা দুর্নীতি করে নাকি যারা দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করে? দুদকের এই চিঠির সাংবাদিকদের জন্য অত্যন্ত অসম্মানজনক ও আপত্তিকর চিঠি। অবিলম্বে তা প্রত্যাহার করতে হবে। পাশাপাশি দুদক চেয়ারম্যানকে আমি বলতে চাই, আপনারা আগে নিজের ঘর সামলান। যদি এই চিঠি প্রত্যাহার না করেন শুধু একজন পরিচালক নয় ভবিষ্যতে আরও পরিচালকের মুখোশ উন্মোচন হবে।’
মানববন্ধনের এক পর্যায়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য। তিনি বলেন, ‘এই চিঠিটি মেয়াদউত্তীর্ণ হয়ে গেছে। ফলে এই চিঠির কোনো কার্যকারিতা থাকবে না। এটা নিয়ে আপনাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।’
তার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ক্র্যাব সভাপতি বলেন, ‘আমাদের কথা পরিষ্কার এই আপত্তিকর চিঠি প্রত্যাহার করতে হবে। এর কার্যকারিতা স্থগিত করতে হবে। দুদক কর্মকর্তারা বলেছেন যে, এই চিঠির মেয়াদউত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে। এটি কোনোভাবেই সম্ভব নয়, সরকারি চিঠি কখনো মেয়াদোত্তীর্ণ হয় না। আপনারা আইন জানেন আমরা ক্রাইম রিপোর্টাররাও আইন জানি। তাই অবিলম্বে এই চিঠি প্রত্যাহার করুন।’