দর্পণ ডেস্ক : অতিমারি এবং আর্থিক মন্দা- এই জোড়া সংকট থেকে দেশকে উত্তরণে বিভিন্ন দফতরের দায়িত্বে নারীই প্রথম পছন্দ জো বাইডেনের। ভারতীয় বংশোদ্ভুত কমলা হ্যারিসকে দেশের ভাবী ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাছাই করে ইতিহাস তৈরি করেছিলেন জো বাইডেন। এবার তার মন্ত্রিসভায় আরও দুই ভারতীয় বংশোদ্ভূতের নাম শোনা যাচ্ছে, যাদের একজন ঘটনাচক্রে বাঙালি। হোয়াইট হাউসে প্রবেশের আগে আবার আরেক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ এই ভাবী প্রেসিডেন্টের।
জানা যায়, অর্থনীতি এবং যোগাযোগ রক্ষাকারী বিভাগগুলোর দায়িত্বে বেশির ভাগক্ষেত্রে নারীদের বসাতে চলেছেন তিনি। বাইডেনের হাত ধরে এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রে বাজেট সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ দফতরের প্রধানও হতে চলেছেন আর এক ভারতীয় বংশোদ্ভুত।
‘বিবিধের মাঝে মিলন মহান’- ক্ষমতায় আসার আগে এমনই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বাইডেন। সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষার ছবি ধরা পড়েছে বাইডেনের বিভিন্ন দফতরের দায়িত্ব বণ্টনেও। সূত্রের মতে, হোয়াইট হাউসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ‘অফিস অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বাজেট’-এর প্রধান হতে চলেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভুত নীরা টান্ডেন। বর্তমানে বাম ঘেঁষা সেন্টার ফর আমেরিকান প্রোগ্রেস-এর চিফ এগজিকিউটিভ নীরা এক সময় হিলারি ক্লিন্টনেরও ঘনিষ্ঠ ছিলেন।
নীরা ছাড়াও বাইডেনের তালিকায় রয়েছেন অনেকেই। প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিবিদ সিসিলিয়া রাউসকে ৩ সদস্যের আর্থিক পরামর্শদাতা পরিষদের দায়িত্বে আনতে চলেছেন আমেরিকার ভাবী প্রেসিডেন্ট। এ ছাড়া জেয়ার্ড বার্নস্টাইন এবং হিদার বাউশে অন্য ২ সদস্য হিসাবে দায়িত্ব নিতে চলেছেন। আমেরিকার ইতিহাসে প্রথম অ্যাফ্রো-আমেরিকান হিসাবে ওই দায়িত্ব পেতে চলেছেন রাউস। এ ছাড়া রাজকোষ সচিব হিসাবে জ্যানেট ইয়েলিনের নাম আগেই জানিয়েছেন বাইডেন।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব হিসাবে দায়িত্ব পেতে চলেছেন আরও এক মহিলা জেনিফার সাকি। দীর্ঘ দিন ডেমোক্র্যাটদের মুখপাত্র হিসাবে দায়িত্ব সামলানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। তা ছাড়া যোগাযোগ রক্ষাকারী দফতরের প্রধান হিসাবে দায়িত্ব নিতে পারেন কেট বেডিংফিল্ড। দীর্ঘ কাল ধরেই বাইডেনের প্রচার এবং যোগাযোগ রক্ষার দায়িত্ব সামলে আসছেন কেট। ডেমোক্র্যাট নেত্রী অনিতা ডানের মতে, ‘‘ক্ষমতা এবং বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির দিক থেকে এই দলটি খুবই সংহত।’’
প্রসঙ্গত, আমেরিকায় ভারতীয় বা সাউথ এশিয়ান কমিউনিটির গুরুত্ব ক্রমশ বাড়ছে। কমলা হ্যারিসকে হবু ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ করার সিদ্ধান্তেও সেই যুক্তি স্পষ্ট। এর পর সেই জনগোষ্ঠী থেকে একের পর এক প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। এর অন্যতম কারণ সেই জনগোষ্ঠী এ বার ঝুলি ভরে ডেমোক্র্যাটদের ভোট দিয়েছে। ফলে তাঁদের প্রতি যে দায়বন্ধতা বাইডেনের থাকবে, তা অস্বীকার করা যায় না। সম্প্রতি আরুণ মজুমদারকে মন্ত্রী হিসাবে বেছে নেওয়ার যে খবর প্রকাশিত হয়েছিল দেশের সংবাদমাধ্যমে, সেখানেও সেই যুক্তি স্পষ্ট। তাকে বাছা হয়েছিল সাউথ এশিয়ান, বিশেষত এশিয়ান কমিউনিটির একজন প্রতিনিধি হিসেবেই।