দর্পন ডেস্ক : মুহোযা জন পিয়েরে একসময় তার স্ত্রী’কে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতো। স্ত্রীকে তিনি শুধুমাত্র সন্তান ভরণপোষণের উপলক্ষ্য হিসেবে বিবেচনা করতেন।
পিয়েরে বলেন, ‘আমি কখনো ঘরে ফিরে যদি দেখতাম কোনো কাজ অসম্পূর্ণ রয়েছে, আমি আমার স্ত্রীকে বকাঝকা করতাম এবং তাকে প্রহারও করতাম। আমি আমার বাবার উদাহরণ অনুসরণ করছিলাম; তিনি কখনও ঘরের কোনো কাজ করতেন না’।
এই মানসিকতা পরিবর্তন করতে অভিনব একটি প্রকল্প পরিচালনা করছে রুয়ান্ডার একটি সংস্থা। প্রকল্পটির নাম-‘বান্দেবেরেহো’। এই প্রকল্পের অধীনে সন্তান লালন পালন এবং গৃহস্থালির দেখাশোনা সংক্রান্ত কিছু বিষয়েও শিক্ষাদান করা হয় স্থানীয় পুরুষদের। এই উদ্যোগটি রুয়ান্ডার পূর্বাঞ্চলের মুউলি গ্রামে তৃণমূল পর্যায়ে পরিচালিত হওয়া একটি সামাজিক সংস্কারমূলক প্রকল্পের অংশ।
ঐ প্রকল্পটির স্বেচ্ছাসেবীরা জন পিয়েরে-কে এমন কিছু কাজ করতে শিখিয়েছে যেগুলো তিনি আগে মনে করতেন যে শুধু নারীদের কাজ। খন তিনি জানেন কীভাবে রান্না করতে হয় এবং বাচ্চাদের কাপড় পরিষ্কার করতে হয়। তবে জন পিয়েরে-র মানসিকতায় পরিবর্তন আনাটা কিন্তু সহজ ছিল না।
জন পিয়েরে-র বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যরা যখন জানতে পারলো যে তিনি ঘরের কাজ করা শিখতে যাচ্ছেন তখন তাকে সবাই তিরস্কার করেছিল। তিনি বলেন-‘আমার পরিবারের সদস্য আর বন্ধুরা ধারণা করেছিল যে নিশ্চয়ই আমার স্ত্রী আমাকে জাদু করেছে। তারা আমাকে বলে, আসল পুরুষ কখনো রান্নার জন্য লাকড়ি যোগাড় করে না বা খাবার তৈরি করে না’।
কিন্তু জন পিয়েরে যখন দেখলেন তার এই শিক্ষায় তার পরিবার দারুণভাবে উপকৃত হচ্ছে, তিনি তখন সেসব কথায় কান দেননি।
তিনি বলেন তার সন্তানদের সাথে তার সম্পর্ক ভালো হয়েছে এবং তার স্ত্রী এখন কলার ব্যবসা শুরু করেছেন, যার ফলে তাদের পরিবারের অর্থনৈতিক সচ্ছলতা বৃদ্ধি পেয়েছে; তারা তাদের ঘর বড় করেছেন।
তিনি আরো বলেন, ‘আমার স্ত্রী এখন নিজের সুবিধা-মতো ব্যবসা করে এবং ঘরের কাজও করে, যার ফলে আমাদের পরিবার আগের চেয়ে অনেক ভাল অবস্থানে পৌঁছেছে। আগে আমার ধারণা ছিল স্ত্রীকে সবসময় ঘরে থাকতে হবে, যা এখন পাল্টেছে’।