বরিশালে অধিক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ বিদেশি জাতের সবজি ‘ব্রকলি’ চাষ বাড়ছে। গত বছর বরিশালে পরীক্ষামূলকভাবে দুই জন কৃষি উদ্যোক্তা ব্রকলিসহ বিভিন্ন উন্নতজাতের সবজি চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন। ভালো ফলন এবং বাজারে অধিক মূল্য পাওয়ায় এবার তাদের দেখে অনেকেই ব্রকলি চাষ করে আশার আলো দেখছেন। কৃষি বিভাগও নতুন নতুন সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করছেন কৃষকদের।
শখের বশে গত বছর বিদেশি জাতের সবজি ব্রকলি চাষ করে সাফল্য পেয়েছিলেন সদর উপজেলার কর্নকাঠীতে এডামস পার্কে নূরেন নাহার মারিয়া এবং নগরীর ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের করমজা এলাকার মুনজে এলাহী দুলাল। গত বছর তারা দুই জনেই ভালো ফলন পেয়েছিলেন। নতুন জাতের সবজিতে সাধারণের আগ্রহ থাকায় অধিক মুনাফাও করেছিলেন তারা।
সদর উপজেলার কর্নকাঠীতে এডামস ইডেনেও এবার ব্রকলি চাষ গতবারের চেয়ে বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ওই পার্কের কর্মচারী মো. সাবিদ।
দুলাল ও মারিয়ার সাফল্যে বরিশালে এবার অনেকেই ব্রকলি চাষ করে আশার আলো দেখছেন।
২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বামনীকাঠী এলাকার কৃষক আব্দুল বারেক প্রথমবারের মতো ব্রকলি চাষ করেছেন। স্বপ্ন নিয়ে সবজি ক্ষেত পরিচর্যা করছেন তিনি।
আব্দুল বারেক বলেন, পাশের এক উদ্যোক্তাকে দেখে তিনিও এবার ব্রকলি চাষ করেছেন। ফলন ভালো হয়েছে। ব্রকলি চাষে বাড়তি কোনো ঝামেলা নেই। শুধু জৈব সার আর পানি দিতে হয়। তবে আগাম চারা রোপন করতে পারলে ফলন ভালো হয়।
কৃষকরা জানান, নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে রোপন করা হয় ব্রকলির চারা। নিভীর পরিচর্যার পর আড়াই মাসেই ফুল ধরেছে। এই ফুলই ব্রকলি।
বরিশাল নগরীর লাইন রোডের বাকেরগঞ্জ বীজ ভান্ডারের সত্ত্বাধিকারী এসএম জাকির হোসেন জানান, বিদেশি জাতের ব্রকলিতে ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি এবং ফাইবার সমৃদ্ধ। এই সবজির পুষ্টিগুণ অন্যান্য সবজির চেয়ে বেশি। এ কারণে জনগণের মাঝে নতুন এই সবজি নিয়ে বেশ আগ্রহ রয়েছে। বিশেষ করে চাইনিজ রেস্তোরাঁগুলো ব্রকলিতে বেশি আগ্রহী।
কৃষকরা জানান, বর্তমানে প্রতি কেজি ব্রকলি ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এই সবজি খেতেও সুস্বাদু।
বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হরিদাস শিকারী জানান, বিদেশি জাতের ব্রকলি দেখতে অনেকটা ফুলকপির মতো। তবে রং সবুজ। এই সবজির স্বাদ এবং পুষ্টিগুণ ফুলকপির চেয়ে বেশি। নতুন নতুন সবজি চাষ করলে কৃষক লাভবান হবে বলে স্বপ্ন দেখাচ্ছে কৃষি বিভাগ। এই লক্ষ্যে কৃষি বিভাগ কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছে বলে জানান হরিদাস শিকারী।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন