প্রথম ম্যাচের মতোই সহজ জয় পাওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের। তামিম ইকবালের বড় সেঞ্চুরিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নিজেদের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড নতুন করে গড়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু শুরুতে ধসে যাওয়ার শঙ্কায় পড়া জিম্বাবুয়ে মিডল অর্ডার ও  লোয়ার অর্ডারের দৃড়তায় বাংলাদেশকে চেপে ধরে। শেষ পর্যন্ত মাশরাফিদের দম বের করে ৪ রানে হেরেছে সফরকারীরা। বাংলাদেশ পেয়েছে রানের হিসেবে নিজেদের দ্বিতীয় ছোট জয়। বাংলাদেশ শুরুর দুই ম্যাচে জিতে নিশ্চিত করেছে সিরিজ।

বাংলাদেশ ওপেনার তামিম ইকবাল এই সিরিজে একই যাত্রায় পৃথক ফল দেখলেন। প্রথম ম্যাচে ধীরে খেলে ভক্তদের দুয়ো। পরেই ম্যাচেই দেশসেরা ১৫৪ রানের ইনিংস খেলে স্তুতি। নতুন করে আরও একবার বুঝলেন, এদেশে ফুল যেমন সহজে ফোঁটে কান্না আসে অনায়াসে। খারাপ খেললেই যেমন ‘গেল গেল রব ওঠে’। ভালো খেললেই ‘ছোটে প্রশংসার বান’। মঙ্গলবার সিলেটে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তার অভিনন্দনের জোয়ারে ভাসা ইনিংসে ভর করেই কষ্টের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।

প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয় ম্যাচেও টস জিতে ব্যাটিং নেয় বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে লিটন দাসের সেঞ্চুরিতে ৩২১ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে তামিমের ১৩৬ বলে সাজানো ২০ চার ও তিন ছক্কায় দেড়শ’ ছাড়ানো ইনিংসে বাংলাদেশ করে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নিজেদের সর্বোচ্চ ৩২২ রান। যদিও দলের রানটা সাড়ে তিনশ’ ছোঁয়া হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ দিকে মেহেদি মিরাজ-মাশরাফিরা খেলতে পারেননি।

জবাব দিতে নেমে জিম্বাবুয়ে শুরুতেই উইকেট হারাতে থাকে। দলের ৫০ রানের মধ্যে রেগিস চাকাভা-ব্রেন্ডন টেইলর ফিরে যান। একশ’ রানের মধ্যে ফেরেন ফিফটি করা ওপেনার কামুনহুকামে (৫১) ও দলের সিনিয়র ক্রিকেটার এবং অন্যতম ভরসা শেন উইলিয়ামস। কিন্তু ম্যাচটা ছেড়ে দেয়নি জিম্বাবুয়ে। ওয়েলসি মেধেভেরে ও সিকান্দার রাজা দলকে জয়ের পথে রাখেন। 

তারা ফিফটি করলেও ইনিংসটা বড় করতে পারেননি। মেধেভেরে ৫২ রান করে ফেরেন। এরপর সিকান্দার রাজাকে ৬৬ রানে ফেরান অধিনায়ক মাশরাফি মর্তুজা। ৪২ ওভারে ২২৫ রানে ৭ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। ওখানেই ম্যাচটা শেষ হয়ে যেতে পারতো। কিন্তু দুই বোলার টিতোন্দা মুতুমবজি ও ডোনাল্ড ট্রিপানো দলকে জয়ের আশা দেখান। তারা দু’জন অষ্টম উইকেট জুটিতে যোগ করেন ৮০ রান। শেষ দিকে তাদের ঝড়ো ব্যাটিংয়ের কাছে অসহায় দেখিয়েছে আল আমিন-শফিউলদের। মুস্তাফিজ-সাইফউদ্দিনের অভাবও প্রকট হয়েছে। জয়ের জন্য শেষ দুই ওভারে ৩৪ রান দরকার ছিল জিম্বাবুয়ের। শেষ ওভারে দরকার ছিল ২০ রান। তারা আল আমিনের করা ওভারটায় নিতে পারে ১৫ রান।

বাংলাদেশ দলের স্পিনাররা এ ম্যাচে দারুণ বোলিং করলেও পেসাররা ছিলেন চরম ব্যর্থ। তাইজুল ইসলাম ১০ ওভারে ৫২ রানে নেন ৩ উইকেট। মিরাজ ৭ ওভার হাত ঘুরিয়ে মাত্র ২৫ রান খরচায় তুলে নেন ১ উইকেট। মাশরাফি তার ১০ ওভারে ৫২ রান দিয়ে ১ উইকেট নিলেও আল আমিন-শফিউলরা রান খরচায় ছিলেন উদার। আল আমিন ১০ ওভারে ৮৫ রান ও শফিউল ৯ ওভারে ৭৬ রান খরচা করে নেন একটি করে উইকেট।