দর্পণ ডেস্ক :
শনিবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ের নতুন ভবনে ১৪ দলের বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, জুডিশিয়াল ক্যুতে ব্যর্থ হয়ে যুক্তফ্রন্টের নেতারা আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রতিহত করতে নতুন চক্রান্ত শুরু করেছেন। কিন্তু সংবিধানবিরোধী কোনো কাজ এদেশে হবে না। সে ধরনের কোনো কাজ ১৪ দলও মেনে নেবে না। নির্বাচন ঠেকানোর ক্ষমতা কারাে নেই।
তিনি বলেন, নির্বাচন জনগণের অধিকার। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করাও রাজনৈতিক দলের অধিকার। সংবিধান অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বরের নির্বাচনে ১৪ দল শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অংশ নেবে, জনগণের রায়কে হাসিমুখে বরণও করে নেবে।
ড. কামাল হোসেন ও অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীসহ কয়েকজন নেতার নতুন জোট প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, যখনই নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে জনগণের রায় নেয়ার সময় আসে, তখনই একটি অশুভ মুখচেনা মহল তৎপরতা শুরু করে দেয়। আজ ফ্রন্ট হচ্ছে, অসুবিধা নেই
কিন্তু অনেককেই চিনি। অত্যন্ত ঘৃণা ও উদ্বেগের সঙ্গে বলতে হয়, কিছুদিন আগেও একজন বিশিষ্ট আইনজীবী ও আইনজ্ঞ একজন সাবেক প্রধান বিচারপতিকে ব্যবহার করে জুডিশিয়াল ক্যু করে পাকিস্তানের মতো অবস্থা সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ১৪ দল নেতাদের দৃঢ়তার কারণে ওই চক্রান্ত ব্যর্থ হয়েছে। এখন আবার নতুন চক্রান্ত শুরু হয়েছে, কীভাবে নির্বাচন প্রতিহত করা যায়।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন ঠেকানোর জন্য বলা হচ্ছে তাদের দাবি মানতে হবে। এ ধরনের অযৌক্তিক দাবি কেউ মানবে না। কোনো অর্থহীন সংলাপের সঙ্গেও ১৪ দল একমত নয়। সংলাপের মানে হচ্ছে নির্বাচন পিছিয়ে দীর্ঘায়িত করার চক্রান্ত, একটি অসাংবিধানিক সরকার প্রতিষ্ঠার পরিস্থিতি সৃষ্টি করা। তাই ১৪ দল সংলাপের নামে ছাড় দেয়ার পক্ষে নয়।
‘সংবিধানের বাইরেও নির্বাচন করা যেতে পারে’- বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে ১৪ দলের মুখপাত্র বলেন, এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে যারা কথা বলেন, তাদের মনের অভিসন্ধি বোঝা যায়। খেলায় জিততে হলে যে কোনোভাবে নিয়ম পরিবর্তন করে খেলায় অংশ নিতে হবে- এটা হতে পারে না। সুবিধা অনুযায়ী খেলার নিয়ম পরিবর্তন করা যাবে না।
নির্বাচন নিয়ে সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে ১৪ দল ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়া পর্যন্ত মাঠে থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, ১৪ দল সজাগ আছে। দেশবাসীকে অনুরোধ করব, নির্বাচন ফলপ্রসূ করতে সজাগ থাকুন। এ লক্ষ্যে ১৪ দল ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে মাঠে নামবে। পর্যায়ক্রমে সারাদেশে বিভাগীয় সমাবেশ করবে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আমরা যার যার মতো নির্বাচনী কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ব। আমাদের সামনে একটাই কাজ, একাত্তরের ঘাতক ও পঁচাত্তরের খুনিদের মাঠে-ময়দানে ও নির্বাচনের মাঠে পরাজিত করা।
ড. কামালের কঠোর সমালোচনা : এর আগে বৈঠকে ১৪ দল নেতারা গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের কঠোর সমালোচনা করে বক্তব্য দেন। এ সময় সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ূয়া বলেন, পরিস্থিতি জটিল করার চেষ্টা চলছে। ড. কামাল এ ষড়যন্ত্রের নায়ক। বি. চৌধুরী ও জাফরুল্লাহ্ চৌধুরীরা এর সঙ্গে যুক্ত। খোন্দকার মোশতাকের প্রেতাত্মারা ঘুরে বেড়াচ্ছে।
জাসদের (ইনু) সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি বলেন, আগামী নির্বাচন হচ্ছে ষড়যন্ত্র মোকাবেলার নির্বাচন। এ ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে নির্বাচনে জয়ী হতে হবে। গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, কোনো ষড়যন্ত্র বিনা চ্যালেঞ্জে ছাড়া হবে না।ন্যাপের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বলেন, স্বাধীনতা বিরোধীদের এ চক্রান্ত জনগণই সফল হতে দেবে না।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ আহমদ হোসেন বলেন, যারা দুর্বল, তারাই এ ধরনের ষড়যন্ত্র করে। তবে ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় আমাদেরও শক্তি সংহত করতে হবে।
ন্যাপের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বলেন, স্বাধীনতা বিরোধীদের এ চক্রান্ত জনগণই সফল হতে দেবে না। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ আহমদ হোসেন বলেন, যারা দুর্বল, তারাই এ ধরনের ষড়যন্ত্র করে। তবে ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় আমাদেরও শক্তি সংহত করতে হবে।
জাতীয় পার্টির (জেপি) সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে বৈঠকে ১৪ দল নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এস কে সিকদার, রেজাউর রশীদ খান, নাজমুল হক প্রধান, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কামরুল আহসান, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ।