দর্পণ ডেস্ক : সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ঢাকা সফররত ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। বুধবার দুপুর পৌনে ১টার দিকে স্মৃতিসৌধে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান তিনি। দুপুর সাড়ে ১২টার পর তিনি সেখানে পৌঁছান।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সড়ক পথে তেজগাঁওয়ে পুরাতন বিমান বন্দরে পৌঁছান রামনাথ। সেখান থেকে হেলিকপ্টারে করে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে পৌঁছান তিনি। শ্রদ্ধা নিবেদনের পর কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন ভারতের রাষ্ট্রপ্রধান। শহীদদের প্রতি সামরিক কায়দায় সশস্ত্র সম্মান জানায় সশস্ত্রবাহিনীর একটি চৌকস দল। এ সময় বেজে ওঠে বিউগলের করুণ সুর।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে একটি গাছের চারা রোপণ করেন ভারতের রাষ্ট্রপতি। সই করেন স্মৃতিসৌধের পরিদর্শন বইয়ে। তার সঙ্গে ছিলেন সহধর্মিণী সবিতা কোবিন্দ ও কন্যা স্বাতি কোবিন্দ। সাভারের আনুষ্ঠানিকতা শেষে তিনি রওনা দেন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে। সেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পাশাপাশি জাদুঘর ঘুরে দেখবেন।
প্রসঙ্গত, মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে তিন দিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছান ভারতের প্রেসিডেন্ট। সে সময় তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও তার সহধর্মিণী রাশিদা খানম। এ সময় কুশল বিনিময় করেন দুই দেশের দুই রাষ্ট্রপ্রধান।
পরে রাষ্ট্রপতি হামিদের আমন্ত্রণে ভিভিআইপি টার্মিনালে তৈরি করা অস্থায়ী অভ্যর্থনা মঞ্চ। সেখানে আসেন রামনাথ কোবিন্দ। সেখানে ভারতের রাষ্ট্রপতিকে গার্ড অব অনার দেয় সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল। পরে প্যারেড ঘুরে দেখেন ভারতের রাষ্ট্রপ্রধান।
জানা গেছে, রামনাথ কোবিন্দের সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন ভারতের ফার্স্টলেডি, রাষ্ট্রপতির কন্যা, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী, দুজন সংসদ সদস্য ও ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সফরসূচি অনুযায়ী, বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ভারতের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। পরে ভারতের রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বঙ্গভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এ সময় ভারতের রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত একটি টি-৫৫ ট্যাংক এবং একটি মিগ-২৯ যুদ্ধ বিমান বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষণ এবং প্রদর্শনের জন্য রাষ্ট্রপতিকে উপহার হিসেবে প্রদান করবেন। এরপর রামনাথ বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি কর্তৃক আয়োজিত নৈশভোজে অংশগ্রহণ করবেন।
আশা করা হচ্ছে, ভারতের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাতে দু’দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে।
সফরের দ্বিতীয় দিন ১৬ ডিসেম্বর জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে ভারতের রাষ্ট্রপতি গেস্ট অব অনার হিসেবে বাংলাদেশের বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন। একই দিন বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের সাউথ প্লাজাতে বাংলাদেশের বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীর ঐতিহাসিক মুহূর্তে বঙ্গবন্ধুর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং রক্তস্নাত বিজয়ের আবেগ ও আনন্দ উদযাপনের জন্য আয়োজিত মহাবিজয়ের মহানায়ক অনুষ্ঠানে তিনি অংশগ্রহণ করবেন।
সফরের শেষ দিন ১৭ ডিসেম্বর রামনাথ ঢাকার রমনাস্থ কালী মন্দিরের সদ্য সংস্কারকৃত অংশের উদ্বোধন করবেন এবং মন্দিরটি পরিদর্শন করবেন। ওইদিন দুপুর তিনি দিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন।

News Editor : Ganash Chanro Howlader. Office: 38-42/2 Distillery Road, 1st floor, Gandaria, Dhaka-1204.