করোনাভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে বিদেশ থেকে আসা মানুষদের কোয়ারেন্টিনে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত দেশগুলো থেকে বাংলাদেশে আসা মানুষদের ঘরে থেকে ‘স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টিনের’ পরামর্শ দিয়েছে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআর।

আইইডিসিআর-এর পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বিবিসি বাংলাকে বলেন, ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সবাই যাতে আগে থেকেই সতর্ক থাকেন সে বিষয়টি নিশ্চিত করতেই এই পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত চীনে আড়াই হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে আরো ৭৮ হাজারের বেশি মানুষ।

যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া এবং থাইল্যান্ডে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে। যুক্তরাজ্যে এখনও পর্যন্ত ২৩ জন আক্রান্ত হওয়ার খবর জানা গেছে।

ডা. সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, এর আগে চীনফেরত বাংলাদেশি ও অন্য দেশের নাগরিকদের কোয়ারেন্টিনে রাখার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু এখন আক্রান্ত যেসব দেশে লোকাল ট্রান্সমিশন বা স্থানীয় সংক্রমণ আছে সেসব দেশ থেকে আসা মানুষদেরও কোয়ারেন্টিনে থাকা উচিত।

এই মুহূর্তে বেশি করা বলা হচ্ছে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান ও ইতালির কথা। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, চীন ছাড়াও ইতালি এবং ইরান থেকে করোনাভাইরাস অন্য দেশে ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে।

সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডসহ লোকাল ট্রান্সমিশন রয়েছে এমন ১৭টি দেশ রয়েছে। এছাড়া প্রতিদিনই নতুন নতুন দেশে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ছে। এসব দেশ থেকে যারা আসবেন তাদের কোয়ারেন্টিনে থাকা উচিত বলছে আইডিসিআর

তবে বিদেশ থেকে আসা মানুষরা স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন কিনা তা কিভাবে নিশ্চিত করা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়টা বেশ কঠিন।

প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অর্থাৎ চাকরি বা ব্যবসার সুবাদে যারা কোন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অন্য দেশ থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন তাদেরকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করা যায়।

“চীনের যারা এখানে কাজ করছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার যারা কাজ করছেন তারা এখানে নির্দিষ্ট জায়গায় থাকেন। তাদের চিকিৎসকের মাধ্যমে কোয়ারেন্টিনে রাখাটা মনিটর করা যায়।”

কিন্তু ব্যক্তিগত পর্যায়ে যারা দেশে ফিরছেন তাদের কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা কঠিন বলে জানান তিনি।

এক্ষেত্রে সেলফোন ভিত্তিক সারভেইল্যান্সের মাধ্যমে তাদের উপর এক ধরণের পরোক্ষ নজরদারি করা হয়। যারা বাইরে থেকে আসে তাদের ফোন নম্বর সংগ্রহ করা হয় এবং তাদের ফোন করা হয়। তারা বিদেশ থেকে ফেরার দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে একবার এবং আরেকবার ১০ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে এ ধরণের ফোন করা হয়।

“সেসময় আমরা জানার চেষ্টা করি যে তারা কোয়ারেন্টিনে আছেন কিনা, তাদের কোন উপসর্গ আছে কিনা” তিনি বলেন।

তবে এক্ষেত্রে সব সময় সরকারি উদ্যোগ নয়, বরং নাগরিক হিসেবে দায়িত্ব পালনও একটা ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন তিনি।