অনলাইন ডেস্ক : রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে গত ২৯ জুলাই দুই বাসের রেষারেষিতে নিহত দুই কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে দুঃখপ্রকাশ করেছেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। তিনি বলেছেন, সেদিন ওই ঘটনার পরে আমার হাসিমুখের অভিব্যক্তির জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আপনারা যারা আমার এই আচরণে দুঃখ পেয়েছেন তাদের কাছে আমি ক্ষমা চাই। আপনারা বিষয়টি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। তিনি বলেন, ‘সেদিনের (আমার) হাস্যোজ্জ্বল মুখ ছিল অনাকাঙ্ক্ষিত। আমার মুখ সব সময়ই হাস্যোজ্জ্বল থাকে। সেদিন ঘটনা সম্পর্কে সাংবাদিকরা আমার কাছে যখন জানতে চায়, আমি তখনও সে বিষয়ে কিছুই জানি না। তাই স্বভাবসুলভ ও স্বাভাবিকভাবেই বলেছি, যে অপরাধী হবে তাকে শাস্তি পেতে হবে, এবং আজ যে বিষয় নিয়ে আমরা এখানে বসেছি সেই বিষয় নিয়ে আলোচনা করি। এসব কথা বলার সময় আমার মুখটি ছিল হাস্যোজ্জ্বল, যা অনাকাঙ্ক্ষিত। যা দেখে অনেকেই কষ্ট পেয়েছেন। আপনারা বিষয়টি নিশ্চয়ই ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। সেদিনের সেই আচরণ ছিল একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত।’
মঙ্গলবার (৩১ জুলাই) রাজধানীর মতিঝিলে বিসিআইসি অডিটরিয়ামে আয়োজিত এক সভাশেষে সচিবালয়ে ফিরে নিজ দফতরে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি জানান, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এতে আমি মর্মাহত। ব্যথিত এবং শোকাহত।’ তিনি জানান, ‘আর যেন কোনও মায়ের বুক খালি না হয় আমরা সেই পদক্ষেপ নিচ্ছি। আমিও সন্তানের পিতা। ইতোমধ্যেই অভিযুক্ত বাস দুটি জব্দ করা হয়েছে। চালকদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের শাস্তি পেতেই হবে। আমি কথা দিচ্ছি, অভিযুক্ত চালকদের বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে আমাদের সংগঠন থেকে তার বিরুদ্ধে কোনও অবস্থান নেওয়া হবে না।’
মন্ত্রী বলেন, ‘অনেকেই বলেছেন, ঘটনা ঘটার পর আমি নিহত শিক্ষার্থীদের বাসায় সমবেদনা জানাতে গেলাম না কেন? আমি যাইনি একথা ঠিক। আমি মনে করেছি, আমার বক্তব্য নিয়ে যেভাবে সমালোচনা হচ্ছে, সেই অবস্থায় সেখানে গেলে হয়তো অন্য পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো। আমি সেই পরিস্থিতি এড়াতে সেখানে যাইনি।’
গত রবিবার দুপুরে রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। একই ঘটনায় আহত হন আরও ১১ থেকে ১৫ জন শিক্ষার্থী। রবিবার এই দুর্ঘটনার বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় নৌমন্ত্রীর হাসির ছবি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় বইছে। শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ তাকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান। পদত্যাগও চাইছেন শাজাহান খানের।
এদিকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, তিনি (শাজাহান খান) সেদিনের আচরণের সমালোচনাকে গ্রহণ করেছেন। শাজাহান খান সেদিনের অনিচ্ছাকৃত ভুলকে ক্ষমাসুন্দরভাবে দেখার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান।
নৌমন্ত্রী সেদিনের দুর্ঘটনার জন্য দোষীদের শাস্তি পাওয়ার বিষয়টি পুনরায় ব্যক্ত করে বলেন, ‘দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হলে কোনও সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ করা হবে না।’
সূত্র: বাংলা ট্রিবউন
নিজের অভিব্যক্তির জন্য ক্ষমা চাইলেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাহজাহান খান
Posted by Bangla Tribune on Tuesday, 31 July 2018