অনলাইন ডেস্ক : কিছু মানুষ আছেন, যারা দিনের পর দিন ৩/৪ ঘণ্টা ঘুমিয়েও সব কিছু খুব ভালোভাবে সামলাতে পারেন? সেই হিসাব মাথায় রেখে যদি ভাবেন, ঘুমিয়ে সময় নষ্ট না করে আপনিও তাই করবেন, প্রথম দিকে কষ্ট হলেও আস্তে আস্তে অভ্যাস হয়ে যাবে বা বেশি কষ্ট হলে সপ্তাহান্তে তা পুষিয়ে নেবেন, ভুল করবেন?
স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ প্রসেনজিৎ সেনগুপ্ত বলছেন, ‘কম ঘুমিয়ে সব দিক বজায় রাখতে পারেন তারাই যাদের কম ঘুমোনোর ধাত? এটা যার আছে, তার আছে? না থাকলে চেষ্টা করে খুব একটা কিছু করা যায় না? কাজেই তাদের শরীর মন মেজাজ- সব ঠিক রাখতে দিনে ৬/৮ ঘণ্টা নিশ্ছিদ্র ঘুম দরকার? না হলে কম ঘুমের প্রভাব পড়ে শরীর জুড়ে? শরীর-স্বাস্থ্য-মন, সব ছন্নছাড়া হয়ে যায়? শরীরে বসে যায় স্ট্রেস হরমোনের মেলা? তার হাত ধরে কিছু অসুখ-বিসুখ ডালপালা মেলে, যার মধ্যে কয়েকটি যথেষ্ট জটিল? কাজেই শরীর যতটুকু চায় ততটুকু ঘুমোন, কার্পণ্য করবেন না?
কম ঘুম ও অসুখ-বিসুখ: হৃদরোগের আশঙ্কা বা রোগ থাকলে তার প্রকোপ বাড়ে? বাড়তে পারে রক্তচাপ? পরিবারে থাকলে তো কথাই নেই।
সাম্প্রতিক গবেষণা থেকে জানা যাচ্ছে, ভালো করে না ঘুমোলে শরীরে রোগ প্রতিরোধকারী অ্যান্টিবডি অনেক কম তৈরি হয় এবং তার ফলে ব্রেস্ট ও কোলন ক্যান্সারের প্রবণতা বাড়ে?
কম ঘুমের মূলে যদি অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া সিনড্রোম নামে ঘুমের মধ্যে থেকে থেকে শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো জটিল অসুখের হাত থাকে, যথাসময়ে সঠিক চিকিৎসা না হলে তা থেকে ডায়াবেটিস, হাইপ্রেশার, হƒদরোগ, মেদবাহুল্য ইত্যাদি হওয়ার আশঙ্কা খুব প্রবল? যারা প্রয়োজনের চেয়ে অনেক কম ঘুমান তাদের সাধারণ জ্বর-সর্দি-কাশি বেশি হয়? যার অন্যতম কারণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া?
দিনের পর দিন কম ঘুমালে বিপাক ক্রিয়ার হার কমে শরীরের ক্যালোরি পোড়ানোর ক্ষমতা কমে যায়? স্ট্রেস হরমোন কর্টিসোলের পরিমাণ বেড়ে শুধু যে মন মেজাজ খারাপ হয় এমন নয়, বিঘ্নিত হয় লেপটিন ও ঘ্রেলিন হরমোনের মধ্যেকার তালমিল? এ সবের যোগসাজসে খিদে বাড়ে? বাড়ে খাওয়ার তাগিদ? টুকটাক এটা সেটা খেতে থাকেন মানুষ? চা-কফি-মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে বাড়ে? খাবারের পরিমাণও বাড়ে কখনো? আর কম ঘুমের প্রভাবে ক্লান্ত শরীর-মন বিপদ বুঝেও সে সব সামলাতে পারে না সব সময়? ওজন বাড়তে থাকে। আনন্দবাজার।