কলাপাড়া সংবাদদাতা: লঘুচাপের প্রভাবে বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়ে কয়েকদিনেরঅব্যাহত ভারি বৃষ্টি ও প্রচন্ড বাতাসের কারণে কলাপাড়া পৌর শহরে অসংখ্য ঘর-বাড়ি বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে। তুলনামূলক নিচু এলাকায় বসবাসকারী সাধারণ মানুষের ভোগান্তি ও দুর্ভোগ চরম আকার ধারন করেছে। কলাপাড়াতে বৃষ্টি-বন্যায় বিদ্যুৎ বন্ধ থাকে, এটা অনেক দিন ধরেই চলে আসছে।

কঠোর লকডাউনে পৌর কতৃপক্ষের জরুরী সেবা চালু থাকলেও পৌর মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদার চিকিৎসার জন্য ঈদের পরদিন ঢাকা চলে যাওয়ায় সেবা কার্যক্রম চলছে ঢিলা-ঢালা ভাবে। বিশেষ করে ৫নং ওয়ার্ডের ( চিংগড়িয়া) কমিশনার শেখর মিত্র কিছুদিন পূর্বে মৃত্যুবরণ করায় এ এলাকার ঘানাখন্দে ভরা রোড-ঘাট জরুরী সংস্কারের প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে, যা প্রবল বৃষ্টিতে আরো খারাপ অবস্থা ধারন করছে। অন্যদিকে লকডাউন ও বৃষ্টির কারনে দিনমজুর ও খেটে খাওয়া গরীব মানুষের অভাব-অভিযোগ জানানোর কোনো দায়িত্বশীল প্রতিনিধিও তারা পাচ্ছেন না৷ কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ এর আইন বিষয়ক সম্পাদক ও ৫ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট আইনজীবি নাথুরাম ভৌমিক এক ফেইসবুক পোষ্টে এ ব্যাপারে প্রশাসন ও পৌর মেয়রেের সহায়তা কামনা করেছেন। সরকারি দলের এ প্রভাবশালী নেতার ফেইসবুক পোষ্ট থেকেই বোঝা যাচ্ছে ৫নং ওয়ার্ড তথা কলাপাড়া পৌর এলাকায় বৃষ্টিতে কতটা ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কথিত আছে বর্তমান পৌর মেয়র সংখ্যালঘু অধুষ্যিত চিংগড়িয়ার একচেটিয়া ভোট পেয়ে নিজ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীকে পরাজিত করে এবার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তাই ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের তার কাছে প্রত্যাশাও স্বাভাবিকভাবে বেশি।
আওয়ামী নেতার ফেসবুকে পোষ্টটি হুবহু দেয়া হলো-

গত রাতে অসংখ্য গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙ্গে পড়েছে। জেলার সর্বত্র বিদ্যুৎ
সরবরাহ বন্ধ। অস্বাভাবিক জোয়ার ও অতি বৃষ্টিতে উপকূলীয় এলাকার নিচু
এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। অসংখ্য ঘর-বাড়ী, মাছের ঘের ও পুকুর তলিয়ে
গেছে। প্রায় ৩ হাজার হেক্টর আমন ক্ষেত পানিতে তলিয়ে রয়েছে। পানিবন্দি হয়ে
পড়েছে বহু পরিবার। সমুদ্রে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেও বৈরী আবহাওয়ার
কারনে মহিপুর-আলীপুর মৎস্যবন্দরে মাছ ধরা ট্রলার গুলো নোঙ্গর করে আছে।

এদিকে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস গত ২৪ ঘন্টায় বছরের সর্বোচ্চ ২৬২ মিলিমিটার
বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। বাতাসের গতিবেগ রেকর্ড করা হয়েছে ২১ কি.মি.। আজও
সকাল থেকে অব্যাহত ভাবে বৃষ্টি হচ্ছে। এতে দূর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয়ের
খেটে খাওয়া মানুষ। বৃষ্টির এমন ধারা অব্যাহত থাকলে মৌসুমী সবজী চাষিরা
ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি অফিস।

জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুদ রানা জানান, এ বৃষ্টিপাত
২০০৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ।