আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এ দেশে কোনো মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না। আমরাই প্রথম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করি। এ ছাড়া আরো তিনটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে। আবার যদি ক্ষমতায় আসতে পারি তাহলে প্রতিটি বিভাগেই একটি করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করে দেব।
রোববার বিকেলে গণভবনে বাংলাদেশ মেডিকেল সম্মেলন-২০১৮ ও বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ডাক্তারদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের সেবা করা আপনাদের সর্বপ্রথম কর্তব্য। মানুষের সেবার মতো মহৎ কাজ আর হতে পারে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এত ডাক্তার নিয়োগ দিচ্ছি। ডাক্তারদের জন্য সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছি, তারপরও উপজেলায় ডাক্তার পাই না। তারা উপজেলার হাসপাতালে থাকতে চান না। যে উপজেলায় ১০ জন ডাক্তার থাকার কথা সেখানে ডাক্তার পাওয়া যায় চার-পাঁচজন। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।
তিনি বলেন, গত ১০ বছরে চিকিৎসাসেবার অনেক উন্নতি হয়েছে। উপজেলায় যেসব হাসপাতালে ৩০ বেড ছিল সেগুলো ৫০ থেকে ১০০ বেডে উন্নীত করা হয়েছে। আগে ডিপ্লোমা পাস করে নার্স আসতো এখন গ্র্যাজুয়েট নার্স আসছে। নার্সদের দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদা দিয়েছি। এ ছাড়া প্রাইভেট হাসপাতাল ও মেডিকেল কলজেগুলো যাতে ভালোভাবে চলতে পারে, এ কারণে মেডিকেল ইকুইবম্যান্ট ও যন্ত্রপাতির ওপর ট্যাক্স প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন করে দিয়েছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা জানেন, ৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর স্বাস্থ্যসেবাকে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক করা হয়েছিল। গ্রামের অসহায় নারী ও শিশুরা এসব ক্লিনিক থেকে চিকিৎসা পেয়েছেন। বিনা পয়সায় চিকিৎসা ও ওষুধ নিয়েছেন কোটি কোটি মানুষ। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে এসব কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয়। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে আমরা আবার বন্ধ কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করি। এখনও প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ চিকিৎসা পাচ্ছে।
মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এমন সময় অাপনারা কিছু দাবি দাওয়া করলেন, যখন বেলা শেষ। এই সময় আপনাদের দাবি বিবেচনার সময় নেই। কারণ, অামাদের সময় শেষ হয়ে এসেছে। সামনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অাপনাদের দাবি আমি রেখে দিলাম। যদি অাবার ক্ষমতায় অাসি অাপনাদের দাবি মেনে নেব।
সম্মেলনের শুরুতে জাতীয় ও সাংগঠনিক পতাকা উত্তোলন করা হয়। এ সময় পায়রা উড়ান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, প্রতিমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক ও বিএমএ মহাসচিব ডা. মো. এহতেশামুল চৌধুরী।