ঐ ঘটনার জেরে ১৫ বছরের সেই দুই শিক্ষার্থী মিলে সাত বছরের মাশফিকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার চরণদ্বীপ ইউনিয়নের অছিউর রহমান হেফজখানা ও এতিমখানার নাজেরা বিভাগের ছাত্র ইফতেখার মালেকুল মাশফি হত্যার তিন মাস পর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে বেরিয়ে এসেছে এমনই তথ্য।
শনিবার রাতে হেফজখানা থেকে দাওর বিভাগের দুই শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়। পরে রোববার বিকেলে চট্টগ্রাম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে সেখানে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় তারা। একইদিন বিকেলে পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার এসপি নাজমুল আহসান এসব তথ্য জানান।
এসপি নাজমুল আহসান বলেন, মাশফি হত্যার ঘটনাটি ছিল একটি সূত্রহীন মামলা। মাদরাসায় তাকে হত্যা করা হয়। ঐ ঘটনায় হেফজখানার তিনজন শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়। তারা বর্তমানে কারাগারে আছেন। হত্যার এক মাস পর পুলিশ সদর দফতর মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়।
তদন্তভার পেয়ে পিবিআই সিদ্ধান্ত নেয়- যেহেতু হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে প্রযুক্তিগত কোনো ক্লু নেই, মাদরাসার সব শিক্ষক ও ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৪ জুন পিবিআইয়ের একটি দল মাদরাসায় গিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
এর মধ্যে শুক্রবার পিবিআইয়ের কাছে তথ্য আসে- একজন শিক্ষার্থী হত্যার ঘটনা স্বচক্ষে দেখে এবং সে বিষয়টি জানাতে রাজি হয়েছে। এরপর অভিভাবকের মাধ্যমে ঐ রাতেই হেফজ বিভাগের সেই শিক্ষার্থীকে পিবিআই কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়- তার সঙ্গে আরো একজন সহপাঠী ঘটনাটি দেখেছে। পরবর্তীতে তাকেও এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
এসপি নাজমুল আহসান আরো বলেন, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দুজনের দেওয়া তথ্যে শনিবার অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে তারা। এরপর হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি, কম্বল ও বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করা হয়। পরে রোববার তাদের আদালতে হাজির করলে সেখানে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। দুজন সাক্ষীও আদালতে জবানবন্দি দেয়।
৫ মার্চ সকালে মাদরাসার দ্বিতীয় তলার স্টোর রুম থেকে ইফতেখার মালিকুল মাশফির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মাশফি একই উপজেলার চরণদ্বীপ ইউনিয়নের ফকিরাখালী গ্রামের প্রবাসী আব্দুল মালেকের ছেলে। ঐ ঘটনায় বোয়ালখালী থানায় হত্যা মামলা করেন মাশফির মামা।