নেত্রকোণার সীমান্তবর্তী দুর্গাপুর পৌর শহরের কাছারি মোড় এলাকায় একটি বিল্ডিংয়ের বৈদ্যুতিক সংযোগের খুঁটি বসানোর জন্য সড়কের পাশে গর্ত খুঁড়তেই তেল সাদৃশ্য তরল পদার্থ উঠে আসতে শুরু করে। বৃহস্পতিবার বিকেলে মাত্র তিন ফুট গর্ত থেকে তেল পাওয়ার খবরে ঘটনাস্থলে ভিড় শুরু হয়। বিষয়টি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসে মানুষ। ভিড় বাড়তে থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাঠে নামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

এদিকে সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। তাদের উপস্থিতিতে আরো তিনটি গর্ত খোঁড়া হয় এবং সবগুলো থেকেই তেল জাতীয় তরল উঠতে শুরু করে। অনেকেই ঐ তরলকে কেরোসিন ও ডিজেল বলে শনাক্ত করেন। স্থানীয়রা এসব গর্ত থেকে শতাধিক লিটার অপরিশোধিত তরল সংগ্রহ করেছে। তাদের ধারণা- এ থেকে ৬০-৮০ লিটার পরিশোধিত তেল বের হতে পারে।

গর্ত খুঁড়তেই উঠছে তেল, বোতল-গ্যালন হাতে ছুটছে সবাই- ছবি: ডেইলি বাংলাদেশ

এদিকে ঘটনাস্থল থেকে মাত্র কয়েক গজ দূরে রয়েছে একটি তেলের পাম্প। পান্থ নীড় ফিলিং সার্ভিস নামের ঐ পাম্পে বড় পানির ট্যাংকে তেল মজুদ করে বিক্রি করতেন বিক্রেতা। ট্যাংক থেকে কোনোভাবে তেল বের হয়ে আশেপাশে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে ফায়ার সার্ভিস। ঘটনা শুনে তেলের বড় ট্যাংকগুলোর কোথাও ছিদ্র আছে কিনা তা শনাক্ত করার চেষ্টা করছেন পাম্প মালিক।

স্থানীয়রা জানায়, গর্ত থেকে ওঠা তরল পদার্থ নাকের কাছে নিতেই তারা কেরোসিন ও ডিজেলের গন্ধ পায়। এমনকি কাগজ দিয়ে আগুন ধরিয়ে পরীক্ষাও করেছে কেউ কেউ। তবে এই তেল জাতীয় পদার্থ আসার প্রকৃত উৎস জানতে পারেনি তারা।

দুর্গাপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা আরো কয়েকটি গর্ত করে তরল পদার্থের উপস্থিতি পেয়েছি। প্রাথমিকভাবে এই তরলের উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারিনি। আমরা গর্তগুলো ভরাট করে দিয়েছি। ২-১ দিনের মধ্যে বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবে। 

দুর্গাপুরের ইউএনও রাজিব উল আহসান বলেন, এরই মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তেল জাতীয় তরল পদার্থ পাওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। ফায়ার সার্ভিস ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উৎসুক জনতার ভিড় নিয়ন্ত্রণ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছেন। বিষয়টি নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছি। বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।