অনলাইন ডেস্ক : অনেকেই আছেন যারা চিনি ছাড়া চা কল্পনাও করতে পারেন না। অনেকে শুধু চিনি নয়, মিষ্টিজাতীয় খাবার খেতেই বেশি পছন্দ করেন। অনেকে আবার মিষ্টি কুমড়া মিষ্টি নয় বলে স্বাদ বাড়াতে এক মুঠো চিনিই রান্নায় ফেলে দেন। যাহোক, স্বাস্থ্য উপকারিতার কথা বিবেচনায় চিনি খাওয়া ভালো। তবে অতিরিক্ত চিনি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয় বলেই জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। মিষ্টি না খেলে জীবনের স্বাদ যে ফিকে হয়ে যায়, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তবে চিনিকে ছাড়লে স্বাদ হারাবেন ঠিকই, কিন্তু ফিরে পাবেন জীবনকে।
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, চিনি খাওয়া ছেড়ে দিলে শরীরের কর্মক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে বেশ কিছু জটিল রোগও ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। এর ফলে কিডনি, হার্টসহ শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো মারাত্মক ক্ষতির হাত থেকে বেঁচে যায়।
চিনি খাওয়া বন্ধ করলে কী কী উপকার পাওয়া যায় তা জানিয়ে দিয়েছে লাইফস্টাইলবিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাই ডট কম-
মন আনন্দে ভরে ওঠে
আমাদের মন মেজাজ কেমন থাকবে, তা অনেকাংশেই চিনি খাওয়ার পরিমাণের উপর নির্ভর করে। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, বেশি মাত্রায় চিনি খাওয়া শুরু করলে মানুষের উদ্বেগের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। শুধু তাই নয়, এ সময় এমন কিছু হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায় যে তার প্রভাবে মন খারাপ এবং মানসিক অবসাদের মতো সমস্যাও দেখা দেয়। তাই মন ভালো রাখতে চিনি খাওয়া বন্ধ করুন।
এনার্জির ঘাটতি দূর হয়
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, চিনি খাওয়া ছেড়ে দিলে শরীরের ভেতরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে। এর প্রভাবে একদিকে শরীরের ক্ষমতা যেমন বৃদ্ধি পায়, তেমনি অন্যদিকে এনার্জির ঘাটতিও দূর হয়। ফলে ক্লান্তি ভাব দূরে পালাতে সময় লাগে না।
ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ে
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, বেশি মাত্রায় চিনি খাওয়া শুরু করলে রক্তেও চিনির মাত্রা বাড়তে শুরু করে। ফলে শরীরের ভেতর ‘গ্লাইকেশন’ নামে এক ধরনের প্রতিক্রিয়া হতে শুরু করে, যার প্রভাবে ত্বকে বলিরেখা ফুটে উঠতে শুরু করে। সেই সঙ্গে ত্বকের উজ্জ্বলতাও হ্রাস পায়। এ কারণেই ত্বকের বয়স কমাতে আর্টিফিসিয়াল সুগার খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
টাইপ-২ ডায়াবেটিসের দূরে রাখে
আসলে চিনি খেলেই যে ডায়াবেটিস হবে, এমনটা নয়। তবে ২০১৪ সালে স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির তত্ত্বাবধানে হওয়া একটি গবেষণায় দেখা গেছে, খাবারে চিনির মাত্রা যত বেশি হবে, তত ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়বে। আসলে মিষ্টি জাতীয় খাবার বেশি খেলে শরীরে ভিসেরাল ফ্যাটের পরিমাণ বাড়তে শুরু করে, যা টাইপ-২ ডায়াবেটিসের মতো রোগকে শরীরে বাসা করে দেওয়ার পথকে প্রশস্ত করে।
হার্টের ক্ষতির আশঙ্কা কমায়
২০১৪ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যারা বেশি মাত্রায় চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খান, তাদের হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কয়েক গুণ বৃদ্ধি পায়। তাই হার্টকে বাঁটাতে যতটা সম্ভব কম চিনি খাওয়ার চেষ্টা করুন। চিকিৎসকদের মতে, দিনে ৬-৭ চামচ চিনি খাওয়া শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক নয়। কিন্তু তার বেশি হলেই বিপদ!
ওজন কমতে শুরু করে
পেটের চারিদিকে বিশেষ করে লিভার, প্যানক্রিয়াস এবং ইন্টেস্টাইনকে ঘিরে চর্বির স্থর পুরু হতে থাকলেই বিপদ! একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, ভুঁড়ি যত বাড়তে থাকে, তত টাইপ-২ ডায়াবেটিসের মতো মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে হার্টের স্বাস্থ্যেরও অবনতি ঘটে। চিনির সঙ্গে পেটের মেদ বৃদ্ধির সরাসরি যোগ রয়েছে বলেও গবেষণায় বলা হয়েছে।
মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ে
চিনি কেবল দাঁতের ক্ষয় করে না, মস্তিষ্কেরও মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, বেশি মাত্রায় চিনি খেলে মস্তিষ্কের কগনিটিভ ফাংশন কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে স্মৃতিশক্তিও হ্রাস পায়। এ কারণে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়াতে চিনি খাওয়া এড়িয়ে চলুন।