মা ইলিশ রক্ষায় গত ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর সারা দেশে ইলিশ ধরা, পরিবহন ও বিক্রি নিষিদ্ধ করেছিল সরকার। ২৯ অক্টোবর থেকে আবার চালু হয় ইলিশ ধরা। প্রাকৃতিক নিয়মেই নদী বা সমুদ্রে বর্তমানে যেসব ইলিশ ধরা পড়ছে সেগুলোতে ডিম থাকবে না। কিন্তু ডিমওয়ালা ইলিশে সয়লাব হয়ে পড়েছে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের হাট বাজার। সংশ্লিষ্টদের অনুমান, নিষিদ্ধ সময়ে ধরা মা ইলিশ এখন বিক্রি হচ্ছে। স্বাভাবিক কারণে দামও অপেক্ষাকৃত কম। এসব ডিমওয়ালা মাছের স্বাদও কম বলে জানান ক্রেতা-বিক্রেতারা।
রাজধানী ঢাকার কয়েকটি বাজারে দেখা যায়, ইলিশ মাছের সরবরাহ সাধারণ সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। আগে যারা অন্য মাছ বিক্রি করতেন তারাও ইলিশের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। অথচ নদী-সমুদ্রে বর্তমানে যে ইলিশ ধরা পড়ছে সেগুলোতে ডিম নেই। গত মাসে ২২ দিন নিষিদ্ধ থাকার সময়ে ডিম ছেড়েছে সব ইলিশই। নিষিদ্ধ সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোরতার কারণে দেশের কোনো এলাকায়ই মা ইলিশ শিকার করতে পারেনি জেলেরা।প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে ডিমভর্তি ইলিশগুলো বাজারে এলো কোত্থেকে? অনেকে বলেন নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ার আগেই ডিমওয়ালা ইলিশ ধরেছেন, কিন্তু বিক্রি করতে পারেননি। পুলিশের ভয়ে লুকিয়ে রেখেছেন। এখন নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর বাজারে তুলেছেন। অনেকের দাবি, নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে অনেকে ইলিশ ধরে বিভিন্ন কৌশলে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। এখন নিষেধাজ্ঞার সময় পার হওয়ার পর বিক্রির জন্য মোকামে তুলেছে। দাম কম হওয়ায় অনেকে ওই ইলিশই বিক্রি করছেন।এগুলোর দামও কম, স্বাদও কম।
মৎস্য অধিদফতর সূত্র জানা যায়, ডিমওয়ালা ইলিশের প্রজনন নিরাপদ করতে গত ৬ অক্টোবর রাত ১২টার পর দেশের সব নদ-নদীতে সব ধরনের মাছ ধরার ওপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। নিষেধাজ্ঞাকালীন নদ-নদীতে মাছ শিকার রোধে মৎস্য বিভাগ এবং প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত এবং অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় অনেক জেলেকে ধরে সাজাও দেয়া হয়। কিন্তু এত কিছুর পরও ইলিশ ধরা পুরোপুরি থামানো যায়নি বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে কিংবা ম্যানেজ করে এ সময় অনেকে মাছ ধরে ফ্রিজে ঢুকিয়ে রেখেছেন বলে জানা গেছে।