আমাদের জন্ম দেয়া মানুষটি একজন নারী, আর জন্মের পর প্রথম যিনি আমাদের কোলে নিয়ে মায়ের কোলে দেয় তিনিও একজন নারী। কোমল মনের মায়াবী চরিত্রটি হচ্ছে এই স্বত্বাটি। বিশালতায় যিনি অমায়িক অসাধারণ। যার হাত ধরে একটি শিশু পূর্ণাঙ্গ মানুষে রূপান্তরিত হয়। সমাজে ঘটে পরিবর্তন।

সেই নারীর মুখের এক চিলতি হাসিই পৃথিবীকে ভরিয়ে দিতে পারে আনন্দের জোয়ারে। যারা আনন্দ পায় সন্তানের সুখে, আবার স্বামীর সাফল্যে অথবা ভাইয়ের আনন্দে। ছেলেরা যত সুখেই থাকুক না কেনো, তার প্রিয় নারীদের মুখের হাসিতে তাদের আনন্দের মাত্রা যেনো আরো বেড়ে যায়। 

নারীরা একদিকে যেমন নিজেদের সামর্থ্যের পরিচয় দিচ্ছে অন্যদিকে অভাব-অনটন ঘুচিয়ে দেশের অর্থনীতিকে করছে চাঙ্গা। স্বামীর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নানা পরিশ্রমী কাজে। শহরে বিভিন্ন কাজের পাশাপাশি গ্রামে বাঁশ ও বেতের কাজ, পোলট্রি শিল্প, মৃৎ শিল্প, বাড়ির আঙ্গিনায় শাক-সবজি চাষ, মৎস্য চাষ, গবাদিপশু পালনসহ সূচিকর্মে অংশগ্রহণপূর্বক পিছিয়েপড়া গ্রামীণ জনপদকে অনন্য পরিচয়ে পরিচয় করছে আমাদের নারী সমাজ।

নারী দিবসের রঙ হিসেবে বেছে নেয়া হয় বেগুনী’কে। বেগুনী রঙ নারীর সততা এবং মর্যাদার পরিচায়ক। তাই বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশেও বেগুনী রঙের পোশাক পরিধান করে নারী দিবস পালন করেন নারীরা।

নারী দিবসের কথা বলতে গিয়ে একটু এর ইতিহাসটা জেনে নেই। ১৯০৮ সালে প্রথমবারের মত নিজেদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে নিউইয়র্কের রাস্তায় নেমে আসে প্রায় ১৫ হাজার নারী। উপযুক্ত সম্মানী, কর্মসময় কমিয়ে আনা সহ বিভিন্ন অধিকার আদায়ে সেদিন আন্দোলনে নেমেছিল মেয়েরা। এ আন্দোলনের রূপ রেখায় জন্ম নেয় একটি দিবস। প্রতি বছর ৮ মার্চ পালিত হয় ‘আন্তজাতিক নারী দিবস’। বরাবরের মতো এ দিবসটি বাংলাদেশেও পালিত হয়। ‘প্রজন্ম হোক সমতার, নিশ্চিত হোক নারী অধিকার’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রথম প্রহরে মোমবাতি জ্বালিয়ে আঁধার ভাঙার শপথ নিয়েছেন নারীরা।

তবে দিবসটি যে শুধু আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ তা কিন্তু নয়। অতীতের কথা ভুলে বর্তমানে নারীরা এগিয়ে গেছে বহুদূরে। জয় করে নিয়েছে পর্বত থেকে শুরু করে মহাকাশ।

বছরের শুধু একটি দিনই যে তাদের জন্য হবে আর এই একটি দিনেই যে তাদের প্রতি আলাদা সম্মান প্রদর্শন করা হবে এমন নয়। প্রতিটি দিনই হোক নারীদের প্রতি সম্মান আর ভালবাসার। তাদের চার দেয়ালের ভিতরে নয় বরং বিচরণ করতে দেই আপন মনে সারা বিশ্বে।