অনলাইন ডেস্ক :
বিশ্বকাপের খেলা কভার করতে রাশিয়ায় গেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার একজন টিভি সাংবাদিক। সেখানে তিনি যখন মাইক্রোফোনে তার কথা রেকর্ড করছিলেন তখন দু’জন নারী ফুটবলপ্রেমী তাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খান। ঘটনাটি চীনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এটিকে ‘যৌন হয়রানির’ ঘটনা বলে বিবেচনা করা হবে কিনা সেটিই তাদের আলোচনার বিষয়।
ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, দক্ষিণ কোরিয়ার একটি টেলিভিশন চ্যানেল এমবিএন-এর রিপোর্টার জিওন গোয়াং রেয়ল ২৮ জুন রাশিয়া থেকে বিশ্বকাপের খবর দিচ্ছিলেন। এ সময় দু’জন রুশ নারী এসে তার গালে চুমু খান। রিপোর্টার ঘটনাটিকে হেসে উড়িয়ে দিতে চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু তাকে কিছুটা বিব্রত দেখাচ্ছিল।
এর কয়েকদিন আগে একজন নারী রিপোর্টার যখন টেলিভিশনে সরাসরি খবর দিচ্ছিলেন, তখন কয়েকজন পুরুষ ফুটবলপ্রেমী তাকে চুমু দিতে চেষ্টা করে। ওই ঘটনারও তীব্র সমালোচনা হয়েছিল।
দক্ষিণ কোরিয়ার সাংবাদিককে চুমু খাওয়ার ঘটনাটি নিয়ে চীনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ওয়েইবো’তে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। ওয়েইবোর ব্যবহারকারীরা প্রশ্ন তুলছেন, পুরুষ সমর্থকদের আচরণ নিয়ে সমালোচনা হলে একই আচরণের জন্যে নারী সমর্থকদের সমালোচনা করা হবে না কেন?
একজন ওয়েইবো ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘আগের ঘটনার সঙ্গে এখানে একটা বৈপরীত্য চোখে পড়ছে। আরেকজন লিখেছেন, ‘এটিকে কেন যৌন হয়রানি হিসেবে দেখা হবে না?’ এই মন্তব্যে লাইক দিয়েছেন শত শত মানুষ। আরেকজন ব্যঙ্গ করে লিখেছেন, ‘যে চুমু খাচ্ছে সে যদি দেখতে খুব সুন্দর হয়, তাহলে সেটা যৌন হয়রানি হবে না।’
এমন ঘটনায় ‘নারী ও পুরুষ সবার ব্যাপারে সমান আচরণের’ আহ্বান জানিয়েছেন অনেকেই। তাদের কেউ কেউ বলেছেন, এই ঘটনায় যে ধরনের প্রতিক্রিয়া হচ্ছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে যে, নারী ও পুরুষের মধ্যে এখনও বৈষম্য রয়েছে।
নারী ভক্তের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে ‘সৌন্দর্যের’ প্রসঙ্গ তোলারও সমালোচনা করছেন অনেকে। তবে এই চুম্বন নিয়ে চীনে বিতর্ক হলেও দক্ষিণ কোরিয়ায় ঘটনাটি নিয়ে তেমন একটা আলোচনা হয়নি। শুধু এমবিএন টেলিভিশন ও তাদের সংশ্লিষ্ট কিছু সংবাদ মাধ্যমে খবরটি প্রচার করা হয়েছে।
তবে দক্ষিণ কোরিয়ার একজন নাগরিক টুইটারে এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করে লিখেছেন, ‘আপনার লিঙ্গ যা-ই হোক না কেন, আপনি যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। বিষয়টি হলো, এমবিএনের একজন সাংবাদিক বিশ্বকাপ কভার করতে রাশিয়ায় গিয়েছিলেন ও সেখানে দুজন নারী তাকে যৌন হয়রানি করেছে।’
গত কয়েক মাস ধরে ওয়েইবো’তে যৌন হয়রানির মতো বিষয় নিয়ে প্রচুর আলোচনা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তাদের অনেকেই অভিযোগ করেছেন, বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হচ্ছে না।
গত সপ্তাহে এরকম একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল যার মূল কথা ছিল, ‘নারী বা পুরুষ, তরুণ বা বৃদ্ধ- যে কেউই যৌন হয়রানির শিকার হতে পারেন।’ এই ভিডিওটিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি করেছিল।
সূত্র: বিবিসি