অনলাইন ডেস্ক :‘কেন এমন করছ? দাও না আমাদের মাফ করে। এক ঘর দরকার নাই, কিন্তু এক ছাদের নিচে থাকি আমরা। বাচ্চাদের প্রতি একটু দয়া করো। তুমি তো প্রতিজ্ঞা করেছিলে, কখনো ছেড়ে যাবে না। এখন কেন ছেড়ে গেছ? আমাদের বাচ্চাদের ভাঙা পরিবারে বড় হতে দিয়ো না। আমি তোমার কাছে হাত জোড় করে বলছি, আমাদের বাচ্চাদের মানসিকভাবে ভেঙে দিয়ো না।’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে কথাগুলো লিখেছেন একসময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ইপ্সিতা শবনম শ্রাবন্তী।
গত ৭ মে শ্রাবন্তীকে তালাকের নোটিশ পাঠিয়েছেন তার স্বামী মোহাম্মদ খোরশেদ আলম। বগুড়া সদরের কালীতলার শিববাড়ী সড়কে শ্রাবন্তীর বাবার বাসার ঠিকানায় এ নোটিশ পাঠানো হয়। শ্রাবন্তী বলেন, ‘প্লিজ, আমার মেয়েদের জন্য সংসারটা বাঁচান।’
শ্রাবন্তী দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। গত ২৫ জুন তিনি দেশে ফিরেছেন। এখন আছেন বগুড়ায়। জানালেন, তার মা লিভার সিরোসিসে ভুগছেন। এখন খুবই অসুস্থ। যুক্তরাষ্ট্রে থাকতেই স্বামীর পাঠানো তালাকের এই নোটিশের খবর পেয়েছেন শ্রাবন্তী। এরপর দ্রুত দুই মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে দেশে এসেছেন। তাদের বড় মেয়ে রাবিয়াহ আলমের বয়স সাত আর ছোট মেয়ে আরিশা আলমের সাড়ে তিন বছর। দেশে ফেরার পর স্বামীর সঙ্গে নানাভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন শ্রাবন্তী। কিন্তু বারবারই ব্যর্থ হচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘দেশে আসার পর আমি রামপুরার বনশ্রীতে আলমের মা-বাবার সঙ্গে দেখা করতে যাই। কিন্তু আমাকে আর বাচ্চাদের বাসায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ঢাকায় আমার নিজের কোনো বাসা নেই। শেষে পরিচিতদের সহযোগিতায় এক মামাতো ভাইয়ের বাসায় যাই। এরপর এখন পর্যন্ত আলম আমার সঙ্গে, এমনকি বাচ্চাদের সঙ্গেও দেখা করেনি। বাচ্চাদের কোনো খোঁজ নেয়নি। গত এপ্রিল মাসে আলম যুক্তরাষ্ট্রে যায়। ওই সময় আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগও করেনি। আমার দুই বাচ্চা সেখানে সরকারের কাছ থেকে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পায়। আলম আমাকে না জানিয়ে ব্যাংক থেকে সেই টাকাও তুলে নিয়ে আসে। সেখানে বাচ্চাদের নিয়ে কীভাবে চলব, কী খাওয়াবÑ তা ভাবেনি। ও বাচ্চাদের সঙ্গেও প্রতারণা করেছে।’ এরই মধ্যে গত ২৬ মে রাজধানীর খিলগাঁও থানায় তিনি স্বামীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন আর যৌতুকের মামলা করেছেন।
খোরশেদ আলম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। তিনি বলেন, ‘আমি অনেক ছাড় দিয়ে শ্রাবন্তীকে বিয়ে করেছিলাম। ২০১০ সালের ২৯ অক্টোবর আমাদের বিয়ে হয়। আমাদের দুটি বাচ্চা হয়েছে। শ্রাবন্তীর যেসব ব্যাপারে ছাড় দিয়েছি, তা থেকে সে এতটুকু সরে আসেনি। এতদিন আমি ব্যাপারগুলো সামনে আনতে চাইনি, কারণ তা আমাদের কারো জন্যই ভালো হবে না। দিনে দিনে আমাদের মধ্যে মানসিক দূরত্ব অনেক বেড়ে গেছে। পারস্পরিক সম্মান, শ্রদ্ধাবোধ, বিশ্বাস নেই বললেই চলে। যতটুকু অবশিষ্ট আছে, তা শেষ হওয়ার আগেই সরে এসেছি। আমি চাইনি আমাদের সম্পর্কের ক্ষতিকর প্রভাব বাচ্চাদের ওপর পড়–ক।’
এদিকে স্বামীর বিরুদ্ধে শ্রাবন্তী অভিযোগ করেন, সম্প্রতি তাদের মাঝে একটি মেয়ে চলে এসেছেন। সে মেয়েটি মালয়েশিয়ায় থাকেন। তিনিও বিবাহিতা। এখন আলমের সঙ্গে প্রেম করছেন। তিনি বলেন, ‘এরপর আলমের আচরণ পাল্টে যায়। এসব নিয়ে কথা বলায় সে আমাকে মারধরও করেছে।’