দর্পণ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দেশে গণপিটুনির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ৪৯ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি চিঠি লিখেছিলেন। যার জেরে তাদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এ নিয়ে হইচই পড়ে গিয়েছিল ভারতজুড়ে। শেষমেশ এক সপ্তাহ পর বিশিষ্টদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা ক্লোজ করল পুলিশ। বুধবার মণিরত্নম, আদুর গোপালকৃষ্ণন, রামচন্দ্র গুহদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া দেশদ্রোহিতার মামলা ক্লোজ করার সিদ্ধান্ত নিল বিহারের মুজফফরপুর পুলিশ। পাশাপাশি ‘মিথ্যা মামলা’ করার দায়ে অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ।

প্রসঙ্গত, মোদিকে খোলা চিঠি লিখে বিশিষ্টরা আদতে প্রধানমন্ত্রী ও দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করেছেন, এই অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আইনজীবী সুধীর কুমার ওঝা। সেই মামলায় মুজফফরপুর আদালতের নির্দেশ মেনেই মামলা দায়ের করা হয়েছিল বলে দাবি পুলিশের। এ প্রসঙ্গে, বিহারের অতিরিক্ত ডিজি (সদর) জীতেন্দ্র কুমার বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনামা মেনেই বিশিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এখানে পুলিশের কোনো ভূমিকা নেই।’ তিনি আরও বলেন, মামলাটি খতিয়ে দেখেছেন মুজফফরপুরের এসএসপি। অভিযোগের সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় প্রামাণ্য নথি পেশ করতে পারেননি অভিযোগকারী। সবদিক খতিয়ে দেখে এটাই স্পষ্ট হয়েছে যে মামলাটি ভিত্তিহীন। সে কারণেই মামলা ক্লোজ করা হচ্ছে।

এদিকে, মামলা দায়েরের পর তিনজনের সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। অভিযোগকারীর ভয়েসও রেকর্ড করা হয়। পুলিশের এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ওই আইনজীবী বলেন, সব অভিযুক্তের সঙ্গে কথা না বলেই ক্লোজ করা হচ্ছে মামলা। মুজফফরপুর পুলিশের তদন্তের বিরুদ্ধে আমি পিটিশন ফাইল করব।

উল্লেখ্য, অসহিষ্ণুতা ও জয় শ্রীরাম ধ্বনি যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি করছে। দেশব্যাপী এই অসহিষ্ণুতার আবহের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীকে আর্জি জানিয়ে প্রথমে চিঠি লিখেছিলেন দেশের ৪৯ জন বিদ্বজ্জন। পরে বিহার আদালতে এই ৪৯ জন বিদ্বজ্জনের বিরুদ্ধেই মামলা করা হয়ে। রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগসহ কয়েকটি অভিযোগ আনা হয়েছে। ওই ৪৯ জনের প্রথম চিঠির পাল্টা হিসেবে ফের চিঠি লিখেছিলেন ৬১ জন বিশিষ্টরা। চিঠির বক্তব্য ছিল, প্রথম চিঠিতে স্বাক্ষরকারীরা বেছে বেছে কয়েকটি ইস্যুতে সরব হচ্ছেন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আচরণ করছেন। সেই চিঠিতে সই করেছিলেন কঙ্গনা রানাওয়াত, প্রসূত যোশী, মধুর ভান্ডারকর, মালিনী অবাস্তির মতো ব্যক্তিত্বরা। ওয়েবসাইট