অনলাইন ডেস্ক : ভারতে শিশু বিক্রির অভিযোগে মাদার তেরেসার সব হোমে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। ঝাড়খণ্ডে মাদার তেরেসার একটি হোমে শিশু বিক্রির অভিযোগ ওঠার পর এই নির্দেশ দিল সরকার।
মাদার তেরেসার এই সংস্থাগুলোতে অবিলম্বে পরিদর্শনের জন্য রাজ্যগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী মানেকা গাঁধী। একইসঙ্গে দত্তক নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সংস্থার সঙ্গে অন্য হোমগুলোকে যুক্ত করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি ঝাড়খণ্ডের রাঁচিতে মিশনারিজ অব চ্যারিটির অধীন ‘নির্মল হৃদয়’ নামে একটি হোম থেকে দত্তকের নামে তিনটি শিশু বিক্রির অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় এক সন্ন্যাসিনী এবং এক নারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারপরই এ নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। তারপরই কেন্দ্রের নির্দেশ, অবিলম্বে মিশনারিজ অব চ্যারিটি-সহ শিশুদের সব হোম অবিলম্বে পরিদর্শন করতে হবে রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনকে। খতিয়ে দেখতে হবে সমস্ত নথিপত্র। তাতে কোনও রকম সন্দেহজনক কিছু পেলেই কেন্দ্রকে জানানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয়ভাবে শিশু দত্তক সংক্রান্ত বিষয়ে নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ করে সেন্ট্রাল চাইল্ড রিসোর্স অথরিটি বা কারা। বছর দু’য়েক আগে দেশে জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্ট চালু হয়েছে। এই আইনে শিশুদের সব হোমকেই নথিভুক্ত করাতে হবে এবং কারার সঙ্গে যুক্ত হতে হবে। মন্ত্রীর নির্দেশে বলা হয়েছে, রাজ্যের সবক’টি হোম ওই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত কিনা, পরিদর্শনে তা খতিয়ে দেখতে হবে। কোনও হোম যুক্ত না থাকলে অবিলম্বে কেন্দ্রকে জানাতে হবে এবং সেগুলোকে কারা-র সঙ্গে যুক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে রাজ্য প্রশাসনকে।
কেন্দ্রীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, সারা দেশের হোমগুলোতে প্রায় দুই লাখ ৩০ হাজার শিশু রয়েছে। মোট হোম রয়েছে প্রায় ৬ হাজার ৩০০। এর মধ্যে দুই হাজার ৩০০ শিশুদের হোম নথিভুক্তির পাশাপাশি কারা-র সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। কিন্তু এখনও কমবেশি চার হাজার হোম কারার সঙ্গে যুক্ত নয়। এই বিপুল সংখ্যক হোমের কারা-র সঙ্গে যুক্ত না হওয়া নিয়ে আগেও উদ্বেগ প্রকাশও করেছেন মানেকা গাঁধী।
‘নির্মল হৃদয়’ কাণ্ডের পরই ঝাড়খণ্ডেও তোলপাড় শুরু হয়েছে। মিশনারিজ অব চ্যারিটির অধীনে সব হোমেই এই ধরনের চক্র কাজ করে বলে অভিযোগ ওঠে নানা মহল থেকে। তারপর থেকেই ঝাড়খণ্ডের হোমগুলোতে চলছে তল্লাশি। ঝাড়খণ্ড শিশু সুরক্ষা সংস্থার চেয়ারপারমন আরতি কুজুর জানিয়েছেন, হোমগুলোতে পরিদর্শন ও নজরদারির জন্য আলাদা টিম গঠন করা হয়েছে। আগস্টের মধ্যেই ওই টিমের রিপোর্ট পাওয়া যাবে বলে আশা করা যায়।-আনন্দবাজার।