অনলাইন ডেস্ক : সিদ্ধিরগঞ্জে আলোচিত ট্রিপল মার্ডারের মূল আসামি, মাসুদ দেওয়ানের ছোট স্ত্রী শোভা আক্তারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাকে আদালতে পাঠালে সে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দিয়েছে। মঙ্গলবার রাতে ভৈরবের জগন্নাথপুর এলাকা থেকে শোভাকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়।

শোভাকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে আলোচিত হত্যাকাণ্ডর তিন আসামি গ্রেফতার হয়েছে। আসামি মাসুদ দেওয়ানের প্রথম স্ত্রী আঞ্জুবী বেগম ও তার দুই মেয়ে মাইদা ও মাহিকে হত্যা করে লাশ পুকুরে ফেলে দিয়েছিল।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম জনান, গত মঙ্গলবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভৈরবের জগন্নাথপুর এলাকা থেকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া চাচাত শ্যালক সবুজ ওরফে সোহেলের দেওয়া তথ্যমতে পুলিশ সেখান থেকে শোভাকে গ্রেফতার করে। আসামি শোভা আক্তার নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুরী থানার ফতুয়া এলাকার বাবুল মিয়ার মেয়ে।

স্বামী মাসুদ দেওয়ান ও চাচাত শ্যালক সবুজ ওরফে সোহেলকে পুলিশ আগেই গ্রেফতার করে পুলিশ। সোহেল নারায়ণগঞ্জে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আশেক ইমামের আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী প্রদান করে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানার দক্ষিণ পাশা আলী এলাকার খলিলুর রহমানের পুত্র মাসুদ দেওয়ানের সাথে নোয়াখালীর সেনবাগ থানার পদুয়া এলাকার সোলেমানের মেয়ে আঞ্জুবী বেগমের (২৪) বিয়ে হয় ৮ বছর আগে। তাদের দুটো কন্যা সন্তান মাইদা (৫) ও মাহি (১৫ মাস)।

কিছুদিন পর স্বামী মাসুদ এক সন্তানের জননী শোভা আক্তারের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। তারা গোপনে বিয়ে করার পর থেকে মাসুদ, শোভা আর আঞ্জুবীর ঝগড়া লেগেই থাকতো।

এই ঝগড়ার জের ধরেই সে মাসুম দেওয়ান ও ছোট স্ত্রী শোভা আক্তার চাচাতো শ্যালক সবুজ ওরফে সোহেলকে সঙ্গে নিয়ে আঞ্জুবী ও তার শিশু সন্তানদের হত্যার পরিকল্পনা করে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী শোভার ইশারায় সোহেল আঞ্জুবীর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ধরে রাখে আর অন্যদিকে শোভা পাঁ চেপে ধরে রাখে। তারপর মৃত্যু নিশ্চিত হলে আঞ্জুবীর লাশ খাটের নিচে রেখে দেয় তারা।

সে সময় এ সকল ঘটনার একমাত্র স্বাক্ষী ছিলো আঞ্জুবীর বড় মেয়ে মাইদা। মায়ের নিথর দেহ দেখে সে কাঁদতে থাকে। এক পর্যায়ে বড় মেয়েকেও একইভাবে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। তারপর ১৫ মাসের মেয়ে মাহিকে হত্যা করতে তেমন অসুবিধা হয়নি ঘাতকদের।

তারপর বড় মেয়েকে একটি লাল শপিং ব্যাগে আর ছোট মেয়েটিকে একটি বাজারের ব্যাগে ভরে খাটের নিচে রেখে দেওয়া হয়।

এরপর আঞ্জুবীর পরনের পোশাক পরিবর্তন করে শোভার একটি কাপড় জড়িয়ে প্লাস্টিকের ড্রামে ভরে রাতের বেলা এক কিলোমিটার দূরে গোদনাইল বার্মা ইষ্টার্ন এলাকার ডিএনডি ক্যানেলে ফেলে দেওয়া হয়। আর দুই মেয়েকে আটি হাউজিং এলাকার আলী হোসেনের মাছের খামারে বাজারের ব্যাগে ভরে ফেলে দেয়।