বিশ্বকাপ ফুটবল মানেই তো ব্রাজিল। বিশ্বকাপ মানেই তো সাম্বা নাচ। ব্রাজিল যেখানেই বিশ্বকাপ ফুটবল খেলেছে সেখানেই ছিল সাম্বা। কিন্তু রাশিয়া বিশ্বকাপ ফুটবলে সাম্বা কোথায় গেলো!
অনেক খুঁজেও পাওয়া গেল না সাম্বা নাচ। কোথাও একটি বারের জন্য পাওয়া গেল না সাম্বার চিত্র। অথচ ব্রাজিল বিশ্বকাপ ফুটবল মাতিয়ে রেখেছে। আর্জেন্টিনার বিদায়ের পর বাংলাদেশের ফুটবল দর্শকদের ঘরের বিশ্বকাপ ফুটবলের আলো জ্বেলে রেখেছে ব্রাজিল। সব ফোকাস এখন ব্রাজিলের দিকে। ব্রাজিল একটার পর খেলায় জিতে চলেছে। নেইমাদের খেলা মাতিয়ে দিচ্ছে ফুটবল দুনিয়া। কিন্তু স্টেডিয়ামে বা বাইরে সাম্বা নেই।
সাম্বার পোশাকে খোলামেলা শরীরে দীর্ঘদেহী শিল্পীদের নাচ মানুষকে আকর্ষণ করত। খেলা শুরুর আগে এবং পরে এমন ছবি ব্রাজিল বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় সব জায়গায় দেখা গেছে। রাশিয়ানরা ব্রাজিলের খেলার দিনগুলোতে স্টেডিয়ামে গিয়ে ভিড় জমিয়েছে সাম্বা দেখার জন্য। খুঁজেছে সাম্বা শিল্পীরা এসেছেন কি না। মস্কোর লঝুনিকি, স্পার্টক স্টেডিয়াম, কাজানের সুন্দর শহর, সামারর মুগ্ধতা সবই পেয়েছে ফুটবল দুনিয়া থেকে আসা দর্শক। কিন্তু সাম্বা না পেয়ে অপূর্ণতা যেন রয়ে গেছে ফরাসি দর্শক আলেকজান্ডারের। সাংবাদিকের কাছে জানতে চেয়েছিলেন তোমরা ব্রাজিলের সাম্বা ড্যান্সের কোনো খবর জানো কি না, কোথায় হবে বলতে পারো কি না।
সাম্বা ড্যান্স দেখার মতো দর্শকের অভাব নেই। রাশিয়ানরা সাম্বার প্রতি ভীষণ দুর্বল। তারা নাচ-গান পছন্দ করেন। ফুর্তিবাজ এসব রাশানরা সাম্বা ড্যান্স পারেন না তারপরও অনুকরণ করতে চান। ব্রাজিল হতে প্রায় শুধু একটা টেলিভিশন প্রতিষ্ঠান হতেই বিশ্বকাপ ফুটবল কাভার করতে এসেছেন প্রায় ৫০০ সাংবাদিক, টিভি ক্রু। সব মিলিয়ে এই একটা দেশ গড়ে প্রায় হাজারের বেশি সংবাদ কর্মী এখন রাশিয়ায়। ছুটছেন নেইমারদের পেছনে। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে জানা গেল এবার তারাও খুঁজেছেন সাম্বা। টিভির লেন্সগুলো তাক করাই ছিল ব্রাজিলের খেলার পর সাম্বা হলে সেটা দেখাবেন। কিন্তু না পেয়ে টিভির সাংবাদিকরাও হতাশ হয়েছে।
সাম্বা ব্রাজিলের জনপ্রিয় একটি রিদম। ঢোল বাজিয়ে এই রিদমটা তৈরি করা হয়। যেটার উপর শিল্পীরা ড্যান্স করেন ঐতিহ্যবাহী পোশাকে। আকর্ষণীয় পোশাকে। ব্রাজিলের ওগ্লোবো টিভির এক সাংবাদিক জানিয়েছেন এই সাম্বা ড্যান্স দক্ষিণ আফ্রিকায় আছে। ব্রাজিলে সাম্বা ড্যান্স শেখার জন্য স্কুল আছে। এই সাংবাদিক জানিয়েছেন সাম্বা আসেনি তবে এবার ব্রাজিল সমর্থকরা নতুন এক সঙ্গীত নিয়ে এসেছেন রাশিয়ায়। এটাকে বলে স্কোয়াদ্রম (ক্রীতদাস)। ব্রাজিলয়ান দর্শক গ্যালারিতে গাইছে আর অন্যদের মনে করিয়ে দিচ্ছে ‘১৯৫৮ বিশ্বকাপে পেলে, ১৯৬২ বিশ্বকাপে গারিঞ্চা, ১৯৭০ বিশ্বকাপে আলবার্তো কার্লোস, ১৯৯৪ বিশ্বকাপে রোমারিও, ২০০২ বিশ্বকাপে রোনাল্ডো।’ এই পাঁচ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নদের নিয়ে গান বানিয়ে অন্য দর্শকদের বলছে আমরা ৫ বার বিশ্বকাপ জিতে অন্যদের ক্রীতদাস বানিয়েছি। তবে ব্রাজিল বিশ্বকাপ ফাইনালে উঠে গেলে সাম্বা ড্যান্সারা চলেও আসতে পারেন।