দর্পণ ডেস্ক : ২০২২-২৩ অর্থবছরের তৃতীয় মাস সেপ্টেম্বরে ১৫৪ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা, যা গত সাত মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ দশমিক ৮৪ শতাংশ এবং গত আগস্টের তুলনায় ২৪ দশমিক ৪ শতাংশ রেমিট্যান্স কমেছে। রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং ডলারের ঘাটতির কারণে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে চাপে আছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রবাসী আয় কম আসায় বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের ওপর সেই চাপ আরো বাড়তে পারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে জানানো হয়, সদ্য সমাপ্ত সেপ্টেম্বর মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে ১৫৩ কোটি ৯৫ লাখ (প্রায় ১.৫৪ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার পাঠিয়েছেন। প্রবাসী আয়ের এ অংক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৮ কোটি ৭২ লাখ ডলার বা ১০ দশমিক ৮৪ শতাংশ কম।
চলতি অর্থবছরের টানা দুই মাস ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স বৈধ পথে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। আগস্ট মাসে ২০৩ কোটি ৭৮ লাখ (২ দশমিক ০৩ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। তার আগের মাস জুলাইয়ে এসেছিল ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। জুলাই মাসে পবিত্র ঈদুল আজহার কারণে বেশি পরিমাণ প্রবাসী আয় এসেছিল। তবে আগস্টে বড় উৎসব ছিল না, তারপরও প্রবাসী আয় ২০০ কোটি ডলার ছাড়ায়।
সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাঁচ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ২৪ কোটি ৬২ লাখ মার্কিন ডলার। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১২৬ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬১ লাখ মার্কিন ডলার। আর বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২ কোটি ৪১ মার্কিন ডলার।
আলোচিত সময়ে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। ব্যাংকটির মাধ্যমে প্রবাসীরা ৩৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন। এরপর সিটি ব্যাংকে এসেছে ১১ কোটি ২৮ লাখ ডলার, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকে ১০ কোটি ৭২ লাখ ডলার, অগ্রণী ব্যাংকে ৯ কোটি ৫৬ লাখ ডলার এবং ডাচ-বাংলা ব্যাংকে এসেছে ৭ কোটি ৯২ লাখ ডলার প্রবাসী আয়।
আলোচিত সময়ে সরকারি বিডিবিএল, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, বিদেশি ব্যাংক আল-ফালাহ, হাবিব ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান ও স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি।
এখন বিদেশ থেকে যেকোনো পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠাতে কোনো ধরনের কাগজপত্র লাগে না। এছাড়া প্রবাসী আয়ের ওপর আড়াই শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার।
এদিকে ডলারের সংকট নিরসনে এবং প্রবাসী আয় বাড়াতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো নিজেরাই বসে ডলারের দাম নির্ধারণ করছে। এতে প্রবাসীরা ডলারের দাম ভালো পাচ্ছেন। বাফেদার ঘোষিত দাম অনুযায়ী, এখন দেশে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে প্রতি ডলার সর্বোচ্চ ১০৭ টাকা ৫০ পয়সায় কিনতে পারবে ব্যাংকগুলো। গত মাসে (সেপ্টেম্বর) সর্বোচ্চ দর ছিল ১০৮ টাকা।

News Editor : Ganash Chanro Howlader. Office: 38-42/2 Distillery Road, 1st floor, Gandaria, Dhaka-1204.