দর্পণ ডেস্ক : তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি আর নেই। সোমবার (৩১ আগস্ট) বিকেলের দিকে নয়াদিল্লির আর্মি রিসার্চ অ্যান্ড রেফারাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ৮৪ বছর বয়সী সাবেক এই রাষ্ট্রপতি।
এর আগে সোমবার সকালের দিকে আর্মি রিসার্চ অ্যান্ড রেফারাল হাসপাতালের এক বিবৃতিতে ভারতের রাজনীতির অন্যতম এই আইকনের শারীরিক অবস্থার অবনতির খবর দেয়া হয়। এতে বলা হয়, ফুসফুসের সংক্রমণের কারণে সেপটিক শকে রয়েছেন তিনি।
হাসপাতালে মস্তিষ্কের অস্ত্রোপচারের জন্য ভর্তি হওয়ার পর পরীক্ষায় মহামারি করোনাভাইরাসও শনাক্ত হয়েছিল প্রণব মুখার্জির। ভারতের সাবেক এই রাষ্ট্রপতি অস্ত্রোপচারের পর থেকে কোমায় ছিলেন।
প্রণব মুখার্জির ছেলে অভিজিৎ মুখার্জি এক টুইট বার্তায় বাবার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন। টুইটে তিনি লিখেছেন, ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আপনাদের জানাচ্ছি যে, আর্মি রিসার্চ অ্যান্ড রেফারাল হাসপাতালের চিকিৎসকদের সর্বোত্তম চেষ্টা ও পুরো ভারতের মানুষের প্রার্থনা, দোয়া সত্ত্বেও আমার বাবা কিছুক্ষণ আগে মারা গেছেন। আমি আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।
গত ৯ আগস্ট নয়াদিল্লির রাজাজি মার্গের বাসভবনের বাথরুমে পড়ে গিয়ে মাথায় গুরুতর আঘাত পান প্রণব মুখার্জি। পরদিন তাকে নয়াদিল্লির আর্মি রিসার্চ অ্যান্ড রেফারাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আঘাতের ফলে তার মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ায় চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন।
অস্ত্রোপচারের আগে করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে দেশটির সাবেক এই রাষ্ট্রপতির।
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধী, পিভি নরসিমা রাও এবং মনমোহন সিংয়ের আমলে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ক্ষমতা থেকে বিদায় নেয়ার পর ২০১৯ সালে দেশটির সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ‘ভারতরত্ন’ লাভ করেন দেশটির ১৩তম এই রাষ্ট্রপতি।
প্রায় পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে ভারতের অন্যতম রাজনৈতিক দল কংগ্রেসের রাজনীতির প্রাণপুরুষ ছিলেন প্রণব মুখার্জি। কংগ্রেসের শাসনামলে ২০১২ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০১৭ সালে ভারতের রাষ্ট্রপতির পদ থেকে বিদায় নেন।