দুই বাসের প্রতিযোগিতার মাঝে পড়ে এক হাত হারিয়ে প্রায় দুই সপ্তাহ মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে হার মানা রাজীব হোসেনের মৃত্যুর জন্য শমরিতা হাসপাতালের অবহেলাকে দায়ী করেছে হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটি।
একইসঙ্গে এই দুর্ঘটনার জন্য প্রাথমিকভাবে স্বজন পরিবহনের চালককে দায়ী করা হয়েছে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে দুই বাসের রেষারেষিতে কিভাবে হাত হারান রাজীব।
৩ এপ্রিল দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকায় সার্ক ফোয়ারার কাছে বিআরটিসির একটি দ্বিতল বাসের পেছনের ফটকে দাঁড়িয়ে গন্তব্যের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন সরকারি তিতুমীর কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রাজীব হোসেন। বাসটি হোটেল সোনারগাঁওয়ের বিপরীতে পান্থকুঞ্জ পার্কের সামনে পৌঁছালে হঠাৎ পেছন থেকে স্বজন পরিবহনের একটি বাস বিআরটিসির বাসটিকে ঘেঁষে অতিক্রম করে।
এ সময় দুই বাসের প্রবল চাপে রাজীবের ডান হাত কনুইয়ের ওপর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ ঘটনায় সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। এতে তার মাথায়ও প্রচণ্ড আঘাত লাগে। শমরিতা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর রাজীবকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে স্থানান্তর করা হয়।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনের ওই চালকদের ভারী যানবাহন চালানোর লাইসেন্স ছিল না।
এর আগে গতকাল (১৪ অক্টোবর) রাজীবের মৃত্যুর ঘটনায় গঠিত কমিটি হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করে। গতকালও বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে শুনানি হয়েছে। গতকাল শুনানি শেষে আদেশের জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়েছিল। তবে আজ আবার শুনানি শেষে আদেশের জন্য ১৪ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট। আর আজকের শুনানিতেই শমরিতার অবহেলার বিষয়টি উঠে আসে।
হাইকোর্টের বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে আজ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল সাংবাদিকদের বলেন, আগামী ১৪ নভেম্বর থেকে রুলের শুনানির জন্য দিন ঠিক করে দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া গতকাল যে প্রতিবেদন কমিটি দাখিল করেছেন সেই প্রতিবেদনের কয়েকটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে। উভয় চালক অর্থাৎ বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনের দুই বাসের চালকদের সংশ্লিষ্ট লাইসেন্স ছিল না।