পৌরাণিক কাহিনী রামায়ণের আখ্যানের স্থান যদিও ভারতবর্ষ এবং লঙ্কা দ্বীপ (এখনকার শ্রীলঙ্কা), তার প্রধান চরিত্র সীতা ও রামকে আমি দেখেছি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে; যেমন নেপাল, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইত্যাদি। থাইল্যান্ডের প্রধান মন্দির গ্র্যান্ড প্যালেসের দেয়ালে রয়েছে এই কাহিনীর চিত্রায়ন; যদিও সেটি বৌদ্ধ মন্দির। বালিতে বেড়াতে গিয়ে দেনপাসারের হোটেলে দেখেছিলাম নাটকে রামায়ণ- বাল্মীকির লেখা সাত খণ্ডের বিশাল কাহিনির জমজমাট উপস্থাপনা এক ঘণ্টার সংক্ষিপ্ত পরিবেশনায়। এবার নিউইয়র্কেও পেয়ে গেলাম তাদেরকে; একটি কামরায় ১৭টি শিল্পকর্মে। তার মধ্যে একটি রুমালেই কাহিনির সারাংশের উপস্থাপনা।
নিউইয়র্ক গিয়ে দু-একটা মিউজিয়ামে না গেলে মনে হয় বেড়ানোটা অসম্পূর্ণ রয়ে গেল। যাওয়ার আগেই জানতাম যে মিউজিয়াম অব মডার্ন আর্ট মেরামত ও সংস্কার কাজের জন্য বন্ধ (সেটি ২০১৯ সালের গ্রীষ্ফ্মকালের কথা)। খোঁজ করলাম মেট্রোপলিটান মিউজিয়াম অব আর্টে (যাকে সেখানকার লোকেরা সংক্ষেপে বলে দ্য মেট) কী আছে। সেখানে স্থায়ী প্রদর্শনী বাদেও অনেক সময় বিশেষ প্রদর্শনী থাকে। তাদের ওয়েবসাইটে গিয়ে জানলাম, এবারের বিশেষ প্রদর্শনীর মধ্যে রয়েছে ভারতীয় চিত্রকলায় সীতা ও রামের কাহিনির রূপায়ণ।
হারলেমে মেয়ের বাসায় ছিল ডেরা। গুগল ম্যাপ ইত্যাদি দেখে জানলাম, বাসার কাছেই পাওয়া যাবে একটি বাস, যেটি ফিফথ অ্যাভিনিউতে এই মিউজিয়ামের পাশ দিয়ে যায়। সুতরাং চ্যালেঞ্জ কিছুই নেই। নিউইয়র্ক শহরে বাস ও পাতাল রেলে (সেখানকার লোকেরা যাকে বলে সাবওয়ে) জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের জন্য অর্ধেক দামে টিকিটের সুযোগ আছে। টিকিট কিনে কাছের বাসস্টপে দাঁড়িয়ে গেলাম। সকালের ভিড়ের সময়টা পার করে বেরিয়েছিলাম বলে বাস পেতে একটু দেরি হলো। তবে এয়ারকন্ডিশন্ড বাস; আর অফিসের সময় নয় বলে ভিড় কিছুই ছিল না। আরাম করে বসে দু’পাশের দৃশ্য দেখতে দেখতে চললাম। প্রথমে হারলেমের মর্নিংসাইড পার্ক ডান পাশে; তার শেষ মাথায় এসে বাস মোড় নিল সেন্ট্রাল পার্কের উত্তরের রাস্তাতে, এবং তারপর ফিফথ অ্যাভিনিউতে পৌঁছে ডানদিকে। তখন হাতের ডানদিকে সেন্ট্রাল পার্ক; আর ফিফথ অ্যাভিনিউর সেই দিকটাতে বেশ গাছ-গাছালি। সেপ্টেম্বরের শেষার্ধ হলেও সেবার গ্রীষ্ফ্ম চলছিল তখনও। কিন্তু গাছের ছায়ায় ছায়ায় বাস যাচ্ছিল বলে বেশ ভালোই লাগছিল।
তবে ফিফথ অ্যাভিনিউতে পৌঁছানোর একটু পরেই বাস আর নড়ছিল না। আমি ঢাকার ট্রাফিক জ্যামের সঙ্গে পরিচিত; সুতরাং অধৈর্য না হয়ে বসে থাকলাম। তবে একেবারে স্থবির অবস্থায় প্রায় আধ ঘণ্টা বাসে বসে থাকার পর কেউ কেউ নেমে হাঁটতে শুরু করল। কিন্তু আমার গন্তব্য আরও প্রায় দুই কিমি দূরে বলে আমি বাসেই বসে থাকলাম। পরে শুনেছিলাম, সেদিন ভোরে সেখানকার এক হাসপাতালে কোনো রাসায়নিক পদার্থ নিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছিল। যার ফলে হাসপাতালের সবাইকে বাইরে সরাতে হয়েছিল। সে কারণে সেখানকার রাস্তায় সৃষ্টি হয়েছিল বিরাট জ্যাম। তবে আমার কোনো সমস্যা হয়নি। কারণ আমার সময়মতো পৌঁছাবার কোনো ব্যাপার ছিল না। আর বিকেলেও ফেরার তাড়া ছিল না; আমি সারাটা দিন হাতে নিয়েই বেরিয়েছিলাম।
সপ্তাহের মাঝখানে কাজের দিন বলে টিকিট কাউন্টারে লাইন তেমন লম্বা ছিল না। জ্যেষ্ঠ হিসেবে টিকিটের দামেও কিছু ছাড় পেলাম। শুধু তাই নয়। একই টিকিটে পরপর তিনদিন মিউজিয়ামে যেতে পারব, তাও জানা গেল। তবে আমি সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারিনি। কারণ পরের দিনই শহরের বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল।
আকারে মেট এতই বিশাল যে, সুনির্দিষ্ট গন্তব্য থাকলেও সেখানে পৌঁছতে সময় লেগে যায় অনেক। তবে দর্শনার্থীদের সহায়তার জন্য রয়েছে বিভিন্ন ব্যবস্থা। নিচের তলাতে টিকিট কাউন্টারের কাছেই রয়েছে তথ্যকেন্দ্র, যেখানে পাওয়া যায় ভবনটির কোথায় কী আছে সব দেখানো একটি ম্যাপ। আর সেই ম্যাপ বেশ কয়েকটি ভাষায় ছাপা। তবে আমার অভিজ্ঞতা হলো এই যে, ম্যাপ দেখেও অনেক সময় কাঙ্ক্ষিত কামরাটি খুঁজে বার করা কঠিন হয়ে পড়ে। সে কারণেই কিনা জানি না, প্রতি তলার একাধিক জায়গায় রয়েছে সাহায্যের কাউন্টার। যেখানে কাউন্টার নেই সেখানে কর্মীরা হাঁটাহাঁটি করছেন সাহায্য করার জন্য। সুতরাং আমি বেশ সহজেই পৌঁছে গেলাম ২৫১ নম্বর রুমে, যেখানে সাক্ষাৎ পাওয়ার কথা সীতা ও রামের।
একটি ঘরে ১৭টি শিল্পকর্মের মাধ্যমে সীতা ও রামের কাহিনি উপস্থাপন করা দুঃসাহসিক কাজ, সন্দেহ নেই। তবে সেখানে প্রবেশপথ যেভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে তাতে বোঝা যায়, তার পেছনে যথেষ্ট চিন্তা-ভাবনা ব্যয় করা হয়েছে এবং বিষয় ও নায়ক-নায়িকাকে গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। যে সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় প্রদর্শনীর ঘরে যেতে হয় তার আগেই একটি প্রবেশপথ, যার দু’পাশে মিথুন যুগল এবং অপ্সরার দুটি দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্য দাঁড়িয়ে আছে। ওপরে ওঠার সিঁড়ির ছাদে একটি প্রাচীন মন্দিরের মণ্ডপের অংশবিশেষ এনে এমনভাবে স্থাপন করা হয়েছে, হঠাৎ মনে হতে পারে, আমি সেই মণ্ডপের ভেতরেই দাঁড়িয়ে আছি।
সিঁড়ির গোড়াতেই সীতা ও রামকে যেভাবে দেখা গেল, তা থেকে মোটামুটি ধারণা করা যায়, কী ধরনের শিল্পকর্ম এ প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে। সপ্তদশ থেকে ঊনবিংশ শতক পর্যন্ত রাজপুত ও পাহাড়ি রাজসভায় যে ধরনের চিত্রকর্ম প্রচলিত ছিল, সে ধরনের কিছু কাজ একসঙ্গে করা হয়েছে এ প্রদর্শনীতে। তবে বেশ কয়েকটি ছবি দেখলেই বোঝা যায়, সেগুলোতে পারস্য ও মুঘল শিল্পের প্রভাব রয়েছে। রাম ও সীতার বিয়ে, রাজা দশরথের মৃত্যু, রামের বনবাস, রাবণের সীতা হরণ, রাম-রাবণের যুদ্ধ, রামের জয় এবং অযোধ্যায় ফেরা- সবই দেখানো হয়েছে এই কাজগুলোতে।
ভারতের কোনো কোনো জায়গায় কাপড়ের ওপরে সুচিকর্মের মাধ্যমেও রামায়ণের কাহিনির বিভিন্ন অংশ তুলে ধরা হয়; এবং সে রকম দুটি কাজ দেখলাম। একটি ছিল বড় আকারের কাপড়ের ওপর দক্ষিণ ভারতের কলমকারী ধরনের হাতে আঁকা ছবি। যদিও কলমকারীতে শাড়ি দেখেছি, একই ধাঁচের রঙের কাজে ছবি আঁকা এই প্রথম দেখলাম। ছবিটি দেখে আমার মনে পড়ল ইন্দোনেশিয়ার বালিতে দেখা বাটিকের কাজের মাধ্যমে রামায়ণের কাহিনির চিত্রায়নের কথা।
তবে একটি রুমালে সুচিকর্মের মাধ্যমে উপস্থাপিত হয়েছে কাহিনির সারাংশ। রুমালটির আয়তন আমাদের দৈনন্দিন ব্যবহারের রুমালের চাইতে দৈর্ঘ্য-প্রস্থে হয়তো দ্বিগুণ হবে। তার ওপরের দিকের এক কোনায় দেখা যাচ্ছে, রাম বনবাসে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন মাকে বিদায় জানিয়ে। আর এক কোনায় রাম ও লক্ষ্মণকে দেখা যায় একটি সোনার হরিণ শিকারের চেষ্টায়, যে হরিণটি রাবণ পাঠিয়েছিল তাদের মনোযোগকে সেদিকে সরাতে, যাতে সে সীতাকে হরণ করার সুযোগ পায়।
প্রথমে সীতা তার দেবরের দেওয়া গন্ডির বাইরে যায়নি। কিন্তু কোনো এক সময় রাবণ সাধু সেজে এলো ভিক্ষা চাইতে; আর তাকে ভিক্ষা দেওয়ার জন্য ভুল করে সীতা তার গণ্ডির বাইরে যেতেই রাবণ তাকে তুলে নিয়ে ছুট দিল। রুমালটির নিচে ডান কোনে দেখা যায় দুঃখিত সীতা বসে আছে রাবণের সামনে। আর বাম কোণে রামের সঙ্গে জড়ো হওয়া বানর বাহিনী এবং রাম-রাবণের যুদ্ধ। কাহিনির শেষ অংশ- যুদ্ধজয়ের পর রাম, সীতা ও লক্ষ্মণের অযোধ্যায় ফেরা; দেখা যায় রুমালটির মাঝখানে।
বড় সাইজের কাজ দুটি বাদে বাকিগুলোতে কাহিনির একেকটি ছোট অংশ তুলে ধরা হয়েছে। যেমন রাজা দশরথের মৃত্যু এবং তাঁর স্ত্রী ও অন্যান্য রমণীর শোকার্ত চেহারা; সীতা, রাম ও লক্ষ্মণের বনে থাকা, রাম ও লক্ষ্মণের অপহৃত া সীতাকে খোঁজা, সীতার অনশন এবং ইন্দ্রদেব এসে তাঁকে কীভাবে খাবার দিচ্ছেন ইত্যাদি। একটু লক্ষ্য করলেই বোঝা যায়, প্রতিটি চিত্রকর্মেই পুরো নাটকটির একেকটি অংক তুলে ধরা হয়েছে। আর যারা পুরো কাহিনীটির সব অংশ অত ভালো করে জানেন না, তাদের বোঝার সুবিধার্থে প্রতিটি ছবির পাশে বিধৃত গল্পটি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত টীকা দেওয়া হয়েছে। সীতার অনশন সম্পর্কিত ছবিটির কথাই বলা যাক।
কাহিনিতে আছে, রাবণের বিয়ের প্রস্তাব নাকচ করে সীতা অনশন শুরু করেন। এদিকে দেবতা বিষুষ্ণ দেখলেন, রাম এসে তাঁকে উদ্ধার না করা পর্যন্ত তাঁকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। সে লক্ষ্যে তিনি ইন্দ্রকে পাঠালেন পায়েস দিয়ে; আর সঙ্গে এলো নিদ্রা দেবী। নিদ্রা দেবীর প্রভাবে রাবণের প্রহরীরা সহজেই ঘুমিয়ে পড়ল। সে সুযোগে ইন্দ্র সীতাকে পায়েস দিতে পারল। ছবিটির দিকে তাকালে দেখা যায় যে মাঝখানে বসে রয়েছেন সীতা; তার সামনে ইন্দ্রদেব পায়েসের পেয়ালা হাতে দাঁড়িয়ে, এবং পেছনে নিদ্রা দেবী। আর সীতার পেছনে প্রহরীরা ঘুমে এলিয়ে পড়েছে। বিভিন্ন রং ব্যবহার করে সীতা, ইন্দ্রদেব ও নিদ্রাদেবীকে আলাদা করে দেখানো হয়েছে; এবং ছবির বিভিন্ন অংশে হলুদ ও সবুজের ব্যবহার কাজটিকে অনন্য এবং আকর্ষণীয় করে তুলেছে। একইভাবে রামের রাজসিংহাসনে বসার দৃশ্যতেও রঙের ব্যবহারের মাধ্যমে সীতা, রাম এবং তাঁর তিন ভাইকে আলাদা করে দেখানো হয়েছে। রাম ও লক্ষ্মণের সীতাকে খোঁজার দৃশ্যতেও আকাশ, নদী এবং অরণ্যের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে নীল আর সবুজের বিভিন্ন আভা।
প্রকরণের দিক থেকে মূলত পাহাড়ি ও রাজপুত ঢঙে আঁকা হলেও বেশ কয়েকটি কাজে মুঘল প্রভাব বেশ স্পষ্ট। উদাহরণ হিসেবে যুদ্ধে বিজয়ের পর রাম এবং সীতার রাজসিংহাসনে বসার দৃশ্যটির কথা বলা যেতে পারে। ছবিতে যে ধরনের স্থাপত্য ও সিংহাসনের যে আকৃতি দেখানো হয়েছে, তাতে বোঝা যায় শিল্পীর শিক্ষায় মুঘল প্রভাব রয়েছে। রাজা দশরথের মৃত্যুর দৃশ্যটি দেখেও সেটাই মনে হলো। তবে এ ধরনের মিথস্ট্ক্রিয়ায় অবাক হওয়ার কিছুই নেই। কারণ মুঘল ঢঙে শিক্ষাপ্রাপ্ত শিল্পীদের রাজপুত দরবারে সমাদরেই গ্রহণ করা হতো।
রামায়ণের কাহিনিকে সাধারণত দেখা হয় অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে শুভ শক্তির জয় হিসেবে। তবে আমার মনে হয়, এতে রয়েছে প্রেম-ভালোবাসার কথা, আছে ঈর্ষা-বিদ্বেষের কথাও। রাজা দশরথ তার দ্বিতীয় স্ত্রীর প্ররোচনায় রামকে বনবাসে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আর সেই শোক তিনি কাটিয়ে উঠতে পারেননি। এ বিষয়টি প্রদর্শনীর কোনো ছবিতে না থাকলেও দশরথের মৃত্যুদৃশ্যে একটি সার্বিক শোকের আবহ বেশ পরিস্কার। আর ভালোবাসা তো পুরো কাহিনীটির আবহতেই রয়েছে। রাম সীতাকে তাঁর সঙ্গে বনে যাওয়া থেকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করছেন- এ রকম একটি ছবি রয়েছে প্রদর্শনীতে। কিন্তু তার পরই একটি ছবিতে বনের ভেতর দেখা যায় রাম, সীতা ও লক্ষ্মণকে। এভাবে দেখলে ১৭টি ছবি দেখতেই অনেক সময় লেগে যায়। কোনো কোনো ছবির সামনে আমি বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেছি। আবার কয়েকটি ছবির কাছে আমি একাধিকবার ফিরে এসেছি। কখনও ছবি থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে হয়তো অন্যান্য দর্শকের আনাগোনা দেখেছি। দেখলাম কত ধরনের কত বর্ণের মানুষের আসা-যাওয়া সেখানে! রামায়ণের কাহিনির চিত্রিত রূপ দেখার জন্য শুধু যে ভারতীয় বা দক্ষিণ এশিয়ার লোকেরাই গেছে, তা কিন্তু নয়।
১৭টি ছবি দেখতে কতটা সময় খরচ করেছি, সে হিসাব আমি রাখিনি। তবে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম, লাঞ্চের সময় অনেক আগে পেরিয়ে গেছে। পশ্চিমা দেশের বড় বড় মিউজিয়ামের ভেতরেই যথেষ্ট খাওয়ার জায়গা থাকে। সুতরাং চাইলে যে কোনো সময় কিছু খেয়ে নেওয়া যায়। দ্য মেটও এর ব্যতিক্রম নয়। সেখানে বেশ কয়েকটি রেস্তোরাঁ রয়েছে; একেবারে পুরো লাঞ্চ থেকে শুরু করে স্ন্যাক, চা-কফি সবই পাওয়া যায়। তবে আমার ইচ্ছে খাওয়াতে কম সময় ব্যয় করে আরও কিছু দেখে নেওয়া। সে ধরনের খাবারের জন্যও রয়েছে একাধিক জায়গা। একই ফ্লোরে পেলাম দ্য গ্রেট হল ব্যালকনি কাফে, যেখানে দাঁড়ালে নিচের লবির প্রায় পুরোটাই দেখা যায়। আর বসলে মাথার ওপরে এবং চারপাশে খিলানের আকারে উঠে গেছে অনেক স্তম্ভ। এ রকম দৃষ্টিনন্দন জায়গায় বসে একাই কাটিয়ে দেওয়া যায় অনেকটা সময়। তবে আমি শুধু এক বাটি স্যুপ এবং একটি ক্রোয়াসঁ নিয়ে বসলাম, যাতে তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ করা যায়। আর খেতে খেতে ভাবতে লাগলাম, এর পর কী দেখা যায়।