অরুন্ধতী রায়

ভারতীয় এই লেখিকা বলেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে ‘তাদের নিজেদের জনগণের বিরুদ্ধে কখনো ব্যবহার করা হয়নি।’ 

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানের মানুষের ওপর হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন ও লুটতরাজসহ বিভিন্ন অপরাধের কথা আজকের দিনে এসেও অস্বীকার করে পাকিস্তান।  

অরুন্ধতী রায়ের মতো একজন খ্যাতি ও মর্যাদাসম্পন্ন লেখিকা ও সমাজকর্মীর অকাট্য মিথ্যা বক্তব্য পাকিস্তানের নিজ অপরাধ অস্বীকারের সঙ্গে হুবহু মিলে যায়। একারণে এটি আরও বেশি অমার্জনীয়। 

ভারতীয় এই লেখিকা বলেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে “তাদের নিজেদের জনগণের বিরুদ্ধে কখনো ব্যবহার করা হয়নি।” এই বক্তব্য আদতে অজ্ঞতার একটি উৎকৃষ্ট প্রদর্শন এবং পাকিস্তানের সহিংসতার ইতিহাস মুছে ফেলার একটি নিকৃষ্ট চেষ্টাও বটে।  

অরুন্ধতী রায়কে নিপীড়িত ও নির্যাতিতের পক্ষের মানুষ বিবেচনা করা হয় এবং এই মানের একজন লেখিকার কাছ থেকে তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তান এবং বর্তমান বাংলাদেশের মানুষের ওপর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নিষ্ঠুরতার ইতিহাস সম্পূর্ণভাবে খারিজ করা, শুধু দুর্ভাগ্যজনকই না, বরং এখানে ক্ষতির সম্ভাবনাও রয়েছে।  

ভারতের সংবিধানের ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার নিয়ে কাশ্মীরে যা হচ্ছে তার নিন্দা জানাতে অরুন্ধতী রায়ের উদ্দেশ্য আমরা বুঝি। তাই বলে মিথ্যা উদাহরণ দিয়ে পাকিস্তানকে সমর্থন করা যুক্তি উপস্থাপনের উপায় হতে পারে না।

প্রকৃতপক্ষে, ১৯৭১ সালে বাঙালি জনগণের ওপর চালানো গণহত্যার বিষয়েই শুধু পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে জবাব দিতে হবে বিষয়টি এমন নয়, আমরা এখানে সিন্ধু ও বেলুচিস্তানের মানুষের বিপক্ষে দেশটির সেনাবাহিনী ব্যবহারের কথাও বলছি।

আমরা আন্তরিকভাবে আশা করি, ‘বুকার’ পুরস্কারপ্রাপ্ত এই লেখিকা ও মানবতাকর্মী তার বক্তব্যের ভুল বুঝতে পারবেন এবং নিজেকে সংশোধন করে নেবেন। কারণ, ছোট কোনো তথ্য ভুল করা এক বিষয় আর উপমহাদেশের লাখ লাখ মানুষের দুর্দশার ইতিহাস খারিজ করে দেওয়া সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়।