অনলাইন ডেস্ক : জনপ্রিয় অভিনেতা আফরান নিশো। ছোট পর্দায় বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন। বিভিন্ন বৈচিত্র্যময় চরিত্রে দর্শকের কাছে দারুণ গ্রহনযোগ্যতা তৈরি করেছেন এই অভিনেতা। তথাকথিত প্রেমের গল্পের বাইরে অভিনয় করতেই তিনি বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন বলে জানান। নিশো বলেন, আমি মনে করি একটি নাটকে গল্পটি যাকে নিয়ে তিনিই মূলত নায়ক। তিনি একজন রিক্সাচালক কিংবা একজন মুচিও হতে পারেন।
আমরা নায়ক বলতে যেটি বুঝি, আমি সেই রকম নায়ক হতে চাই না। আমি গল্পের নায়ক হতে চাই। নির্মাতারা আমাকে নিয়ে এমন নানান চরিত্রে ভাবেন বলে তাদের কাছে কৃতঙ্গতা প্রকাশ করছি। নিশো তার এমন বৈচিত্র্যময় চরিত্রে অভিনয় করা প্রসঙ্গে আরও বলেন, একটা সময় আমার মধ্যে হিরোইজম বিষয়টি হয়তো আর থাকবে না। তখনো কিন্তু আমাকে অভিনয় করতে হবে। এখন থেকে যদি নানা রকম চরিত্রে অভিনয়ের চর্চা না থাকে তখন কিন্তু আমি আর কাজ করতে পারবো না। আমাকে বাধ্য হয়ে অভিনয় থেকে দূরে সরে যেতে হবে। কার অভিনয় দেখে এমন বহুমখী চরিত্রে অভিনয় করার সিদ্ধান্ত নেন-এমন প্রশ্নের জবাবে এই অভিনেতা জানান, তার আদর্শ হুমায়ূন ফরিদী। প্রয়াত গুণী এই অভিনতো সম্পর্কে নিশো বলেন, একজন পরিপূর্ণ অভিনেতা তিনি। ফরিদী ভাইকে দেখেছি বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করতে। তিনি আজীবন তার অভিনয় গুণে আমাদের মাঝে বেঁেচ থাকবেন। তাকে দেখেই আমি এমন সব চরিত্রে কাজ করার উৎসাহ পাই। নিশো সমাসময়িক অনেক নায়িকার সঙ্গে অভিনয় করছেন। গল্পের প্রয়োজনে সবার সঙ্গেই তিনি মিশে যান। এদের মধ্যে কার কার সঙ্গে অভিনয় করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি গল্পের প্রয়োজনে সবার সঙ্গে অভিনয় করতে চাই। তবে এই সময়ে নুসরাত ইমরোজ তিশা, মেহজাবিন ও সানজিদা প্রীতির কথা বলতে পারি। তাদের সঙ্গে অভিনয় করতে বেশি কমফোর্ট ফিল করি। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে গতকাল থেকে ‘হোক প্রতিবাদ’-এই মর্মে একটি স্ট্যাটাস বিভিন্ন নির্মাতা ও শিল্পী পোস্ট দিচ্ছেন। সেখান থেকে জানা যায়, এ সময়ে কক্সবাজারে নাটকের প্রতিদিনের শুটিংয়ের জন্য প্রশাসনের পক্ষে দশ হাজার টাকা করে নেয়া হচ্ছে। এই বিষয়ে নিশো কি জানেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি সত্যি আমাদের জন্য দু:খজনক। শুধু কক্সবাজার নয়, আজকাল বিভিন্ন স্থানে শুটিংয়ে শিল্পী-নির্মাতাদের নানা সমস্যার মুখোমুখী হতে হচ্ছে। কয়েক দিন আগে কাওলায় একটি নাটকের শুটিংয়ে বেশ বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে। একেকজন এসে বলে একেক জায়গা থেকে অনুমতি নিতে হবে। আমি মনে করি গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে শুটিংয়ের জন্য যদি অনুমতি নিতে হয় তাহলে প্রশাসনিকভাবে একটি নিয়ম নীতি তৈরি করা উচিত। সেই নিয়ম মেনেই সবাই শুটিং করবে। কিন্তু সঠিক কোনো নিয়ম না দেখিয়ে শুধু হয়রানি করে অনেকেই। এদিকে নিশো বর্তমানে ঈদের কাজ নিয়ে বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন। এরই মধ্যে ঈদের জন্য সাজ্জাদ সুমনের ‘বুক পকেট’ ও ‘ক্লাসলেস মোখলেস’, সুমন আনোয়ারের ‘কমলার বনবাস’, মেহেদি হাসান জনির ‘সরল সোজা ছেলেটা’ ও ‘একটা প্রেমের গল্প বলবো’, বি ইউ শুভর ‘ভেতর বাহির’ এবং হিমেল আশরাফের ‘লিফটম্যান’ নাটকগুলোর কাজ শেষ করেছেন। এছাড়া আগামীকাল থেকে শুরু করবেন হাবিব শাকিলের ‘রাজ্জাক-সূচিত্রা’ শিরোনামের আরো একটি নাটকের শুটিং। অন্যদিকে বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচার হচ্ছে তার অভিনীত একাধিক ধারাবাহিক নাটক। আর তার হাতে রয়েছে হিমেল আশরাফের ‘এক লক্ষ লাইক’, ইমরাউল রাফাতের ‘সিনেম্যাটিক’, সুমন আনোয়ারের ‘সুখী মীরগঞ্জ’ ও ‘ইডিয়ট’, সাজ্জাদ সুমনের ‘ছলে বলে কৌশলে’, আরবি প্রিতমের ‘সেমি কর্পোরেট’ শীর্ষক ধারাবাহিকগুলো। বড় পর্দায়ও এই অভিনেতা কাজ করার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। অনেকে তার সঙ্গে চলচ্চিত্রের বিষয়ে কথা বলছেন বলেও জানান। তবে তিনি মনের মতো গল্প ও চরিত্র পেলেই চলচ্চিত্রের খাতায় নাম লেখাবেন। সেটির জন্য অপেক্ষা করতে হবে।